মার্কিন বিমান বাহিনীর হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে দেশটির পরমাণু প্রকল্প মাত্র দু’বছরের জন্য পিছিয়েছে বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন। পেন্টাগনের মুখপাত্র সিন পার্নেল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার ওয়াশিংটনে পেন্টাগনের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে পার্নেল বলেন, “গত ২২ জুন ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে অপারেশন মিডনাইট হ্যামার পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী।
অভিযানে ইরানের টার্গেটকৃত পরমাণু স্থাপনাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে যে ইরান শিগগিরই এ ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে এবং অপারেশন মিডনাইট হ্যামারের কারণে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি মাত্র দু’বছর পিছিয়েছে।”
গত ৬ জুন জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অথরিটি (আইএইএ) এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের কাছে ৪০০ কেজিরও বেশি ইউরেনিয়াম আছে এবং এ ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতার মান ৬০ শতাংশ। যদি এই শুদ্ধতার মান ৯০ শতাংশে উন্নীত করা যায়-তাহলে অনায়াসেই এ ইউরেনিয়াম দিয়ে পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।
জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে, ১৩ জুন ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। অভিযান শুরুর কিছু সময় পরে এক ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে আমলে নিয়েই অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অভিযান শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে ইসরানের সেনাবাহিনী। দু-পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি সংঘাতের মধ্যেই গত ২২ জুন ইরানের পরমাণু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ পরিচালনা করে মার্কিন বিমান বাহিনী, যার স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা।
মার্কিন বাহিনীর অভিযানে ইরানের পরমাণু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এ দাবির সত্যতা স্বীকার করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচিও।
তবে এত বিধ্বসীয় হামলা সত্ত্বেও ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত ধ্বংস হয়নি। দেশটির ৪০০ কেজিরও বেশি ইউরেনিয়াম এখন কোথায় আছে, তা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল-কেউই জানে না।
সূত্র : রয়টার্স
টিকে/