পাকিস্তানের প্রায় ৮১ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম চীনের তৈরি। বেইজিং এই দেশটিকে ব্যবহার করছে তাদের যুদ্ধাস্ত্র ও নজরদারি প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য ‘জীবন্ত পরীক্ষাগার’ হিসেবে। এমনটা দাবি করলেন ভারতের সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং। পাশাপাশি ভারত আর কোনো সন্ত্রাসী হামলা চুপচাপ সহ্য করবে না বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি এক প্রতিরক্ষা বৈঠকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনাকালে এসব কথা জানান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল সিং। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় আমাদের দুজন প্রতিপক্ষ ছিল, চীন ও পাকিস্তান। এখন তৃতীয় পক্ষ হিসেবে তুরস্কও সামনে এসেছে, যারা পাকিস্তানকে বিভিন্ন সামরিক সহায়তা দিচ্ছে’। তার মতে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা এখন অনেকাংশেই চীনের সরবরাহ নির্ভর। শুধু অস্ত্র সরবরাহ নয়, চীন এখন পাকিস্তানের মাটিতে তাদের উন্নত ড্রোন, রাডার এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির কার্যকারিতা সরাসরি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এর আগে ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন ভারতীয় নাগরিক। এর পরপরই নয়াদিল্লি চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’, যার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি সংশ্লিষ্ট ঘাঁটি। অভিযানে জইশ-ই-মুহাম্মদ, লস্কর-ই-তাইয়েবা এবং হিজবুল মুজাহদিনের মতো সংগঠনের শতাধিক সদস্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
রাহুল সিং জানান, ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিশ্চিত হয় যে পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে ভারতের গোপন কৌশলগত তৎপরতার রিয়েল-টাইম আপডেট পাচ্ছিল। এই অভিজ্ঞতা ভারতকে আরও উন্নত ও প্রতিক্রিয়াশীল আকাশ প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে বাধ্য করছে বলেও জানান তিনি।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীন পাকিস্তানকে দিয়েছে প্রায় ৮২০ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম। শুধু ২০২০–২৪ সময়কালে চীনের রপ্তানি করা অস্ত্রের ৬৩ শতাংশই গেছে পাকিস্তানে, যা দেশটিকে করেছে বেইজিংয়ের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ক্রেতা।
টিকে/