টেস্ট ক্রিকেটে আইসিসির পক্ষপাতমূলক আচরণ নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার রোশান আবেসিংহে। তার মতে, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারত নিয়মিতভাবে, প্রায় প্রতি দুই মাসে একটি করে টেস্ট সিরিজ খেললেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ আসে ছয় মাস কিংবা তারও বেশি ব্যবধানে। এ ধরনের বৈষম্যই বাংলাদেশের টেস্ট পারফরম্যান্সে পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।
রোশান বলেন, ২৫ বছরে মাত্র ২৩টি টেস্ট জয় কোনোভাবেই সন্তোষজনক নয়। এ পরিসংখ্যানই বলে দেয়, বাংলাদেশ টেস্ট ফরম্যাটে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। তার মতে, সাকিব আল হাসানের মতো একজন অলরাউন্ডারের স্থায়ী বিকল্প খুঁজে না পাওয়াও সাম্প্রতিক ব্যর্থতার বড় একটি দিক। মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি নিয়মিত টেস্ট খেলার অভাবও বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে—এমনটাই মত এই লঙ্কান বিশ্লেষকের।
ক্রিকেটের এলিট ফরম্যাটটা যেন কুলিন দেশগুলোর জন্য সংরক্ষিত। ভারত, ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়া যেভাবে টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে সেভাবে বাকি দেশগুলো পাচ্ছে কি? টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দলগুলোর সঙ্গে বৈষম্যই করছে অভিভাবক সংস্থা।
গেল সপ্তাহে সবশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর আগে দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দেয় টাইগাররা। যদিও তা ছিল না টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। গেল বছর নভেম্বরে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেয়ার পর এ বছর আইসিসির টেস্ট খেললো লঙ্কানদের বিপক্ষে। লম্বা বিরতির কারণে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো টেস্টে শক্তিশালী হয়ে উঠছে না বলে মত লঙ্কান আন্তর্জাতিক ধারাভাষ্যকার রোশান আবেসিংহের। ২৫ বছরে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার একটা বড় কারণ বলেও মনে করেন তিনি।
তেলে মাথায় তেল দেওয়া যাকে বলে, তাই করছে আইসিসি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ঠিকই নিয়মিত টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে। র্যাঙ্কিংয়ের উপরে থাকা দলগুলোকে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ দিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যা করা ঠিক নয় বলে মত লঙ্কান আন্তর্জাতিক ধারাভাষ্যকারের।
রোশান আবেসিংহে বলেন, ‘আপনি ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে দেখেন। তারা প্রায় প্রতি মাসে বা ২ মাস পরপর টেস্ট ম্যাচ খেলছে। তাদের ধারাবাহিকতা আছে। আমি জানি না আইসিসি বড় দলগুলোকে সুবিধা দিচ্ছে কি না। অভিভাবক হিসেবে আইসিসির উচিত এটা নির্ধারণ করা যে প্রতিটি দল যেন ১০টি করে টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারে। অন্তত ২ মাস পর পর যেন লাল বলে ম্যাচ পান ক্রিকেটাররা। আইসিসির ফান্ড আছে। অর্থ উপার্জন না হলে, তাদের নিজেদের থেকে অর্থ দেওয়া উচিত। কিন্তু নিয়মিত ম্যাচ খেলা দরকার। তাহলে দ্রুত এই ফরম্যাটে এগিয়ে যেতে পারবে।’
রঙিন পোশাকে প্রায় সমাপ্ত পঞ্চপাণ্ডব যুগ। সাদা পোশাকে আছেন মুশি। তবে সাকিব আল হাসানের ঘটতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। তার অভাবও টাইগারদের ভোগাচ্ছে বলেও মত রোশানের।
তিনি বলেন, ‘আপনি সাকিব আল হাসানের ঘাটতি কিভাবে পূরণ করবেন। তার অভাব দলে তো আছেই। জানি না তার শরীর সায় দেয় কি না। তবে সে খেললে ভালো হতো। একই সঙ্গে তামিম, মাহমুদউল্লাহ, মাশরাফী। তাদের রিপ্লেস বের করতে হবে। না হলে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।’
একই সঙ্গে অবকাঠামো উন্নয়ন, স্কুল ক্রিকেটে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল নিয়েও ভাবতে হবে বিসিবিকে বলেও মত এই লঙ্কানের।
পিএ/টিএ