ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) বিনিয়োগের ঝুঁকি মোকাবিলায় নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব কোম্পানি যেসব শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড বা কমার্শিয়াল পেপারে বিনিয়োগ করেছে, সেগুলোর আর্থিক ঝুঁকির বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রভিশন রাখতে হবে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার বা বন্ডে বিনিয়োগ করলে, যদি বাজারদর ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম হয়, তাহলে ওই পার্থক্যটুকু ‘বিনিয়োগজনিত ক্ষতি’ হিসেবে ধরে সমপরিমাণ প্রভিশন রাখতে হবে। এক্ষেত্রে, শেয়ার ও বন্ড আলাদাভাবে হিসাব করে ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করতে হবে।
অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীতে দেখানো নিট সম্পদের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এই মূল্য যদি ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম হয়, তাহলে সেই পরিমাণ ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের তিন বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী না থাকে, মুনাফা না দেয় বা অস্তিত্বই না থাকে, তাহলে ওই বিনিয়োগের পুরো অর্থ প্রভিশন হিসেবে ধরে রাখতে হবে।
অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রেফারেন্স শেয়ার, বন্ড বা ডিবেঞ্চার থেকে যদি এক বছরের বেশি সময় সুদ বা লভ্যাংশ না পাওয়া যায়, তাহলে সেটার বিপরীতেও ধাপে ধাপে শতভাগ পর্যন্ত প্রভিশন রাখতে হবে। স্বল্পমেয়াদি বন্ড বা ডিবেঞ্চার পরিশোধ না হলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের বছর থেকেই পুরো অর্থের প্রভিশন রাখতে হবে।
এছাড়া বিনিয়োগ থেকে যেসব সুদ পাওয়ার কথা ছিল, তা যদি ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে না পাওয়া যায়, তাহলে ওই অর্থকে সন্দেহজনক হিসেবে ধরে ৫০ শতাংশ এবং এক বছর পার হলে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত বা অ-তালিকাভুক্ত যেকোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বা বন্ড থেকে নগদ লভ্যাংশ না পেলে, সেটি আয় হিসেবে দেখানো যাবে না। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও আগের নিয়মই বহাল থাকবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর এই চারটি সময়ে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে তাদের বিনিয়োগ বিশ্লেষণ করে যথাযথ প্রভিশন রাখতে হবে। আর ত্রৈমাসিক শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে হার্ডকপি ও সফটকপিতে জমা দিতে হবে।
পিএ/এসএন