তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই শহীদদের আদর্শ ও প্রেরণা অনুসরণ করতে পারলে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব যেখানে রাষ্ট্র হবে সবার এবং সব নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’ তথ্যচিত্রের প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের প্রযোজনায় নির্মিত এই তথ্যচিত্রে ১৯ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি, ঘটনাপ্রবাহ এবং শহীদদের আত্মত্যাগ তুলে ধরা হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের ভূমিকা জনস্মৃতিতে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে তাদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিতেই এই তথ্যচিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, শহীদদের আত্মত্যাগ যেন বিস্মৃত না হয়। তাদের প্রেরণাই হোক আমাদের রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি।
অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই কখনো বেহাত হবে না। গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হয়েছে, এই বিচার আরও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই খুনিদের বিচার সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসতে চায়, তাকে প্রতিবার দমন করতে হয়। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না। শহীদদের উদ্দেশ্য ছিল একটি ন্যায্য ও মানবিক রাষ্ট্র, সেটি বাস্তবায়নে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ও শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামান শহীদদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে দ্রুত বিচার শেষ করার দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা। উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতা, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, শহীদ ও আহতদের স্বজন এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
তথ্যচিত্র ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’-এ তুলে ধরা হয়েছে আন্দোলনের পটভূমি, আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতা ও বিশিষ্টজনদের স্মৃতিকথা, এবং শহীদদের আত্মত্যাগের নানা দিক। এতে দুর্লভ ভিডিওচিত্র, স্থিরচিত্র, গ্রাফিতি এবং বাস্তব ফুটেজের পাশাপাশি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমনপীড়ন ও আন্দোলনের গতি প্রকৃতি।
প্রযোজক সংস্থা জানিয়েছে, মাত্র ৩০ মিনিট দৈর্ঘ্যের হলেও তথ্যচিত্রটি আন্দোলনের একটি জীবন্ত দলিল। ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’ শুধু একটি তথ্যচিত্র নয়, বরং একটি প্রজন্মের লড়াই, আত্মত্যাগ আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস।
আরআর/এসএন