দর্শিল সাফারিকে এখনও লোকজন ‘ঈশান অওয়াস্থি’ হিসাবে মনে রেখেছে। ‘তারে জমিন পর’-এর স্মৃতি আজও দর্শকের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। সেই দর্শিলকে এখন দেখা যাচ্ছে ‘গেমারলোগ’ সিরিজে। তবে বলিউডে ইশানের পথচলা তেমন হয়নি, যেমনটা অনেকে আশা করেছিলেন। দর্শিলকে ফোনে ধরা গেল নতুন সিরিজ স্ট্রিমিংয়ের সূত্রে। বলিউডে পথ চলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, “জীবন তো সবসময় পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে না। সেটাই জীবনের সৌন্দর্য। জীবন নিয়ে সমস্ত প্রত্যাশা বন্ধ রেখেছিলাম একসময়। অনেক আর্টিকল পড়েছিলাম তখন, তার একটা প্রভাব পড়েছিল। তারপরেও দেখেছি, আমার জীবন চলছে, সমস্ত ভাবনাচিন্তা ঠিক আছে। স্পোর্টস ফিল্ডেও অনেকের জীবনের ওঠানামা দেখেছি কিন্তু তারাও ঠিক চালিয়ে নিয়ে গিয়েছে শেষ পর্যন্ত। আমিও তাহলে পারব না কেন! যেমন আপনি বললেন, লোকে আমাকে ঈশান অওয়াস্থি বলেই মনে রেখেছে। এটা আমাকে মোটিভেশন দেয় ওই মাপের কাজের জন্য, এটা তো রাতারাতি হয় না। তার জন্য তো আরও দশবছর লাগত। এই জার্নি নিয়ে আমি খুশি। আমি লাকি ‘গেমারলোগ’-এর এই কাজটা হয়তো একটা বেবি স্টেপস-ই বলব। যারা দেখছে তাদের ভালো লেগেছে।”
দর্শিল কী ‘সিতারে জমিন পর’ দেখেছেন? জিজ্ঞেস করতেই উত্তরে বলছেন ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই’। আমির খানের আমন্ত্রণেই তিনি ‘সিতারে জমিন পর’-এর এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তবে সিক্যুয়েলে নেই বলে আহত হয়েছিলেন? উত্তরে বললেন, “না, আহত হইনি আমি সেই ধরনের মানুষ যে, বিভিন্ন ছবি দেখে ভাবে আমি এই চরিত্র করতে পারতাম, যেমন অন্য শিল্পীরাও ভাবেন। এটা শুধু ‘সিতারে জমিন পর’ বলে নয়, অন্য ছবির ক্ষেত্রেও এটা হতে পারে। আর এই ছবিটার প্রথম ভাগ দিয়েই তো অভিনয়ে আমার যাত্রা শুরু। এটা চিরকালই খুব স্পেশাল এবং আমার হৃদয়ের খুব কাছের। আমি আমির স্যরের কাছে চিরকৃতজ্ঞ আমাকে ওই সুযোগটা দেওয়ার জন্য। একইসঙ্গে মনে করি ‘তারে জমিন পর’ তো শুধু আমার বিষয় নয়। এটা একটা ভাবনা। যা মানুষকে আরও ভালো হতে অনুপ্রাণিত করে। কম বয়সে এই ছবির অংশ হতে পেরেছি বলে খুশি। এই জন্যই ঈশ্বরের পরিকল্পনায় বিশ্বাস করি। এখন আমি সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। কী কাজ পাব তা নিয়ে না ভেবে নিজেকে তৈরি করার কাজেই মন দেওয়া ভালো, সেটা বুঝেছি।”
জীবনে ভালো-খারাপ দু’ই দেখেছেন তিনি। ‘সিতারে জমিন পর’ কেমন লাগল? জিজ্ঞেস করতে দর্শিল জানালেন, “দারুণ। অনেকদিন পর মুভি থিয়েটারে নাইস-পজিটিভ অ্যাটমোসফিয়ার অনুভব করলাম।” নতুন সিরিজে অভিনেতাকে দেখা যাচ্ছে রঘু শাহর চরিত্রে। রঘু যা বিশ্বাস করে তা অ্যাচিভ করার চেষ্টা করে। রঘু জীবনের বাকি চিন্তাকে ভুলে থাকতে গেমিংকে সঙ্গী করেছে।এমনটাই নতুন সিরিজে দর্শিলের চরিত্রে। গল্পটা কেমন? ‘একদল কমবয়সির গল্প। যারা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যোগ দিয়েছে। ভারতের একটা বড় টুর্নামেন্টে যোগ দেওয়ার জন্য। এমন একটা শো যা সকলকে অনুপ্রাণিত করবে, গেমিং-এর মাধ্যমে।যেটা খুবই আউট অফ দ্য বক্স। পরিচালনায় আরিয়া দেও স্যর, আর প্রযোজনায় অভিনয় দেও স্যর এবং নীতা শাহ ম্যাম। সকলেই গেমিং নিয়ে প্যাশনেট। ফলে শোটা খুবই অথেনটিক। ছ’টা এপিসোড রয়েছে।’
এখন তো গেমিং ইন্ডাস্ট্রি খুব বড়। একটা সাক্ষাৎকারে দর্শিল বলেছেন, ছোটবেলা থেকে নিজেও গেমিং করেছেন। তাঁর মন্তব্য, “আমি রিক্রিয়েশনাল গেমার ছিলাম। প্রফেশনালি পারস্যু করিনি কখনও। এটা খুব মজার। আমি কোনওদিন ভাবিনি এরকম একটা চরিত্র করব। যেটা খুবই অপ্রত্যাশিত। দশ বছর আগের যে কারওরই ওইরকম গেমিং এক্সপিরিয়েন্স ছিল, সারাদিন খেলা, চেঁচানো, সময় নষ্ট করা। সেটাই শৈশবের অঙ্গ ছিল। আজকে সেটা বড় ইন্ডাস্ট্রি যেমন আপনি বললেন। এবং পোটেনশিয়াল কেরিয়ার অপশনও বটে। দিনের শেষে আমি দেখেছি, অভিভাবকরাও ভালো কেরিয়ার চান।”
এসএন