নিতেশ তিওয়ারির বহু প্রতীক্ষিত ‘রামায়ণ’ যতই আলোচনায় উঠে আসছে, ততই বাড়ছে গোপনীয়তা। এবার সিনেমার তিন মুখ্য অভিনেতা রণবীর কাপুর, ইয়াশ ও সাই পল্লবীর উপর জারি হয়েছে কঠোর মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা। নির্মাতাদের এমন পদক্ষেপ চলচ্চিত্র মহলে বিরল হলেও, একে কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখা হচ্ছে—যাতে বিতর্ক না হয়, এবং দীপাবলি ২০২৬-এর আগে দর্শকদের সব মনোযোগ থাকে শুধু সিনেমার ওপর।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণ একাধিক। এরমধ্যে অন্যতম, রণবীর ও সাই পল্লবীর অতীত মিডিয়া মন্তব্য নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক। বিশেষ করে ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতের অভিযোগ, যা 'আদিপুরুষ' বিতর্কের স্মৃতি টেনে আনে। নির্মাতারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ‘রামায়ণ’ একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল প্রজেক্ট—এখানে একটিমাত্র ভুল মন্তব্যও সিনেমার ভাবমূর্তি ধ্বংস করতে পারে।
এছাড়া এই সিদ্ধান্তের আরেকটি কারণ হলো ‘স্পয়লার’ এড়ানো। বড় বাজেটের এমন প্রজেক্টে অভিনেতাদের মুখ খুললেই ফাঁস হতে পারে প্লটের নানা দিক। নির্মাতারা চান, সিনেমার অভ্যন্তরীণ বিষয় শুধু বড় পর্দায়ই প্রথম প্রকাশ পাক, মিডিয়ার পাতা বা সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচনায় নয়।
এদিকে, চরিত্রগুলোর ফার্স্ট লুক প্রকাশ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। জানা গেছে, ২০২৬-এর মধ্যে রাম, রাবণ ও সীতার প্রাথমিক লুক সামনে আনা হতে পারে। তবে নির্মাতারা এবার চাইছেন যেন সেটি হয় ঐতিহাসিক ও প্রামাণ্য, কোনো অতিরিক্ত স্টাইলাইজেশন নয়। কারণ ‘আদিপুরুষ’-এ এই জায়গাতেই চরম সমালোচনা শুরু হয়েছিল—অযথা আধুনিকতা ও দুর্বল গবেষণার কারণে।
‘রামায়ণ’-এর নির্মাতারা এবার কাজ করছেন পৌরাণিক গবেষক, সংস্কৃত পণ্ডিত ও ইতিহাসবিদদের সঙ্গে। চরিত্রগুলোর চেহারা, পোশাক, সংলাপ—সবই যাচাই-বাছাই করেই তৈরি হচ্ছে। রামায়ণের ভাব ও ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এক বিশ্বমানের প্রজেক্ট উপহার দিতে চাইছেন তাঁরা।
এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে:
রণবীর কাপুর অভিনয় করবেন শ্রী রামের ভূমিকায়। ইয়াশ বলিউডে অভিষেক করছেন রাবণ চরিত্রে। সাই পল্লবী থাকছেন দেবী সীতার ভূমিকায়। সঙ্গীতে রয়েছেন হ্যান্স জিমার ও এ আর রহমান—যা বিশ্ব সিনেমার এক অনন্য মেলবন্ধনের বার্তা দেয়।
প্রথম পর্ব মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের দীপাবলিতে, দ্বিতীয় পর্ব ২০২৭-এ।
যেখানে অনেক নির্মাতা প্রচারেই বেশি জোর দেন, সেখানে ‘রামায়ণ’ নির্মাতাদের এই ‘নীরবতা কৌশল’ প্রশংসিত হচ্ছে বলিউডজুড়ে। প্রত্যাশা তুঙ্গে, ঝুঁকিও বড়—তাই এই সিনেমার ক্ষেত্রে গোপনীয়তাই এখন সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
এসএন