২৬ বছর বয়সী দানিশ শেখ দিল্লিতে কাগজ কুড়িয়ে জীবন চালাতেন। তার স্ত্রী সোনালিও দিল্লিতে একই কাজ করতেন। এই দম্পতি ও তাদের ৯ বছরের ছেলে সাবিরের এখন কোনো খোঁজ নেই।
এই তিনজনকে ‘বাংলাদেশি’ বলে সন্দেহ করেছিল দিল্লি পুলিশ। সে কারণে তাদের বাংলাদেশে পুশইনও করা হয়েছে। খবর এই সময় অনলাইনের।
কিন্তু দানিশের পরিবারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের মুরারইয়ে পাকুড় থানা এলাকায় তারা বংশগতভাবে বসবাস করছেন। বাড়ি ছেড়ে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দানিশ দিল্লিতে থাকেন। যে বস্তিতে তারা থাকেন, কিছুদিন আগে সেখানে আগুন লাগলে দানিশের ভোটার আইডি কার্ড পুড়ে যায়।
দানিশের শ্যালক রকি শেখ বলেন, তার আধার কার্ড ছিল। সেটা দেখানোও হয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। তার অভিযোগ, গত ২৬ জুন দানিশ, আমার বোন সোনালি আর ভাগ্নেকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। ওদের আর কোনো খোঁজ নেই। সেদিন থেকে ওদের আর ফোনে পাচ্ছি না। সুইচড অফ বলছে।
এভাবে বাংলায় কথা বলা মুসলিমদের ধরে ধরে বাংলাদেশে পুশইন করার অভিযোগ উঠছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। যাদের এভাবে বাংলাদেশে পুশইন করা হচ্ছে তাদের বেশির ভাগই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, যাদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হচ্ছে তারা ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখালেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
এদিকে, রোববার তৃণমূলের পক্ষ থেকে এক্সে অভিযোগ করা হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, নেতাজি এবং বিবেকানন্দর ভাষায় (বাংলা) কথা বলাও এখন নরেন্দ্র মোদির দেশে অপরাধ!
দানিশের শ্যালক বলেন, ২০-২২ জুন থেকে আমাদের কাছে খবরটা আসছিল। সোনালি আমার মামাতো বোন। সোনালির মা যোশাবিবি ২৪ জুন দিল্লি পৌঁছান। তার মাধ্যমে সোনালির আধার কার্ড পাঠানো হয়েছিল। দিল্লিতে উকিলও ঠিক করা হয়েছিল। সোনালির আধার কার্ড সেই উকিলকে দেওয়াও হয়। ২৬ জুন উকিল জানান, আর কিছু করার নেই। দানিশদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরে দানিশের পরিবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলামের দ্বারস্থ হয়েছে। ওই সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, দানিশ ও তার পরিবারকে দ্রুত ভারতে ফেরানোর দাবিতে তারা আদালতে যাচ্ছেন।
সামিরুলের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের ওপর কার্যত অত্যাচার করছে মোদি সরকার। যেভাবে বাংলাদেশি ট্যাগ দিয়ে গায়ের জোরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা এককথায় মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, অবিলম্বে এটা বন্ধ না হলে মারাত্মক সমস্যায় পড়বেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী বাঙালি খেটে খাওয়া মানুষজন। প্রয়োজনে আমি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে তাদের ফেরত আনব।
এসএন