গুজরাটের বড়োদরা জেলার গাম্ভীরা সেতুর একটি অংশ বুধবার সকালে হঠাৎ ধসে পড়লে অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন।
ধ্বংসপ্রাপ্ত সেতুটি মহিসাগর নদীর ওপর অবস্থিত এবং এটি পাদরা-মুজপুর সড়কের অংশ, যা মধ্য গুজরাট ও সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রক্ষা করে। কিছু খবরে মৃতের সংখ্যা ১০জন বলা হয়েছে।
বড়োদরা জেলার গ্রামীণ পুলিশ সুপার রোহন আনন্দ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আনন্দ জেলার সংসদ সদস্য মিতেশ প্যাটেল জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, `উদ্ধার কাজ এখনও চলমান। বড়োদরা ও আনন্দ দুই জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এই তৎপরতা চালাচ্ছেন।'
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ধিসের ফলে সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় একটি ট্রাক, একটি ভ্যান এবং একটি প্রাইভেট কার মহিসাগর নদীতে নিচে পড়ে যায়।
সকাল ৭টা ৩০ মিনিট নাগাদ এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং জরুরি পরিষেবাগুলোকে খবর দেন। পুলিশ ও দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সেতুর একটি অংশ হঠাৎ ধসে পড়ে।
যে তিনটি যানবাহন ওই সময় সেতু পার হচ্ছিল, তারা সরাসরি নদীতে পড়ে যায়। আমরা এখন পর্যন্ত ১০ জনকে নদী থেকে উদ্ধার করেছি।’
ধসে পড়া সেতুটি বড়োদরা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং সৌরাষ্ট্রমুখী যান চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইট করে জানান, ‘গুজরাটের বড়োদরা জেলায় সেতু ধসে প্রাণহানির ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।’
তিনি প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে জানান, ‘সম্মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি তার বিদেশ সফরের মাঝেই আমাকে ফোন করে গাম্ভীরা সেতুর দুর্ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান এবং নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।’
তিনি আরো জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ সম্পর্কে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সব তথ্য সংগ্রহ করেন।’
এই সেতুটি চার দশক পুরোনো এবং দুর্ঘটনার পরই পরিকাঠামোর নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুরোনো সেতুগুলোর নিয়মিত পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতির কারণেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে। বড়োদরার এই সেতু দুর্ঘটনা রীতিমতো গুজরাটজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং রাজ্য সরকার ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমআর/এসএন