সরকার চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতায় বড় ধরনের শিথিলতা এনেছে। এবার থেকে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ সেবা নিতে আর আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর প্রয়োজন হবে না, যা আগের নিয়ম অনুযায়ী বাধ্যতামূলক ছিল।
এ পরিবর্তন আনা হয়েছে সদ্য প্রণীত ‘অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর সংশোধনের মাধ্যমে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, এতে করব্যবস্থা আরও সহজ, জনবান্ধব ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
যে ১৩ সেবায় এই ছাড়:
১️. সঞ্চয়পত্র কেনা (১০ লাখ টাকা পর্যন্ত): পরিবার পরিচালনায় সহায়ক এই সঞ্চয়ে রিটার্ন লাগবে না।
২️. মেয়াদি আমানত (এফডিআর) খোলা বা বহাল রাখা (১০ লাখ টাকা পর্যন্ত): ব্যাংকে আমানত রাখতে সহজ হলো প্রক্রিয়া।
৩️. ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়ন: যেকোনো ধরনের ক্রেডিট কার্ড নিলেই আর রিটার্ন লাগছে না।
৪️. নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ: সিটি করপোরেশন বা পৌর এলাকায় ব্যবসা শুরু সহজ হচ্ছে।
৫️. সমবায় সমিতি নিবন্ধন: সমবায় কার্যক্রমে অংশ নিতে এখন বাধাবিহীন সুযোগ।
৬️. সাধারণ বীমা কোম্পানির সার্ভেয়ার লাইসেন্স গ্রহণ: রিটার্ন ছাড়াই নতুন করে লাইসেন্স নেওয়া যাবে।
৭️. পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ: চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য সুখবর।
৮️. ৫ লাখ টাকার বেশি পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলা: গ্রাহকের জন্য প্রক্রিয়া সহজ হলো।
৯️. এমপিওভুক্ত দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদে সরকারি অর্থপ্রাপ্তি: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাধাহীন অর্থপ্রাপ্তি।
১০. মোবাইল ব্যাংকিং ও ই-উপায়ে কমিশন, ফি বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ।
১১. স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর/দলিল লেখক হিসেবে তালিকাভুক্তি।
১২. ত্রিচক্র মোটরযান (অটোরিকশা) নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়ন।
১৩. ই-কমার্সের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লাইসেন্স গ্রহণ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলছে, কর নেট সম্প্রসারণ ও কর অনাগ্রহ দূর করতেই এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে সাধারণ নাগরিক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সেবা নিতে আগ্রহী হবেন, পাশাপাশি কর ব্যবস্থার সঙ্গে ধীরে ধীরে সংযুক্ত হবেন।
আরআর/টিএ