আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম-খুন ও রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের স্মৃতি মানুষ তখনই ভুলে যাবে, যখন ‘মজলুম’ দাবিদার রাজনৈতিক শক্তিরাই একইভাবে খুন-খারাবি ও পাশবিক আচরণে জড়িয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘প্লিজ আর যা-ই করেন হাসিনার আমলের গুম-খুনের কথা ভুলিয়ে দেয়ার মত নৃশংস আচরণ করবেন না।’
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত “ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা” শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘কয়দিন আগেও আমরা সব রাজনৈতিক দল এক দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, কে ছোট কে বড় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলি নাই।
সবাই একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছি। তাহলে আজ কেন এতো বিভেদ? আজ কেন আমরা একে অপরের দিকে আঙুল তুলছি? শত্রুর হাতে আমাদের রক্ত ঝরলে কিংবা নিগৃহীত হয়ে জেলে গেলেই আমরা শুধু ঐক্যবদ্ধ হই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি পরক্ষণেই আবার ক্ষুদ্র স্বার্থে বিরোধে লিপ্ত হয়েছি।’
বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও দখলবাজির উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনও সংস্কার দিয়ে আমাদের এই রোগ সারবে বলে মনে হয় না।
ক্ষমতা পেলেই অন্যের অধিকার হরণের প্রবণতা পেয়ে বসলে কোন দলের পক্ষেই দেশ পরিবর্তন সম্ভব না।’
তিনি বলেন, ‘হাসিনার শাসনামলের পুনরাবৃত্তিই যদি আমরা করি তাহলে আমাদের সকলকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। জুলাইয়ের শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ কেউ আমাদের ক্ষমা করবে না।’
মজিবুর রহমান মঞ্জু আরো বলেন, ‘আমরা জানতাম হাসিনাকে সরাতে একটি গণঅভ্যুত্থান লাগবে কিন্তু এই গণঅভ্যুত্থান কীভাবে হবে? এর নেতা কে হবে? এটি আমরা জানতাম না।’
তিনি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সকলকে ঐকবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা কোনভাবে আমাদের শত্রুকে সুযোগ দিতে চাই না। আমাদের একে অপরের প্রতি আঙুল তোলা এবং কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতেই হবে।’
অনুষ্ঠানে বাবর চৌধুরীর সঞ্চালনায় ও শেখ আব্দুন নুরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ সহ জাতীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
টিকে/