ফরিদপুরের মধুখালীতে কাঁচামরিচের বাজারে হঠাৎ করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি মরিচ বাজার হাট-মধুখালীতে সোমবার (১৪ জুলাই) প্রতিমণ মরিচ বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকায়। খুচরায় দাম উঠেছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি পর্যন্ত।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অতিবৃষ্টির কারণে মরিচ গাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। চাষিরা বাজারে পর্যাপ্ত মরিচ তুলতে পারছেন না। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাড়ছে দাম।
মধুখালীর রামদিয়া এলাকার চাষি ফয়সাল হোসেন বলেন, “এবার পাঁচ বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করেছি। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে অনেক গাছ মারা গেছে।” একই অভিযোগ মধুখালীর আরও অনেক চাষির।
মধুখালী পাইকারি বাজারের আড়তদার মো. আলম শেখ বলেন, “ব্যবসায়ীদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবং সরবরাহ কম থাকায় হঠাৎ দাম বেড়ে গেছে। ঢাকা, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এখান থেকেই মরিচ যায়।”
বাজার কমিটির সভাপতি মো. লিটন শেখ বলেন, “এক কেজি মরিচ পরিবহন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে সাত টাকা বাড়তি খরচ পড়ে। সরবরাহ কম থাকায় গত কয়েকদিনে প্রতি মণ মরিচ ৮ হাজার থেকে বেড়ে ১১ হাজার ৫০০ টাকায় পৌঁছেছে।”
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, “চলতি মৌসুমে জেলায় ৩১৭০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টিতে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় বাজারে প্রভাব পড়েছে। বৃষ্টি কমলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুব এলাহী জানান, উপজেলায় ২৭২০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১৫০ হেক্টর বৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে এবং ৫ হেক্টরের ফসল পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত। মরিচগাছে পরাগায়ন না হওয়ায় ফলন কমছে, ফলে বাজারে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।
এদিকে খুচরা ক্রেতারা মরিচের এমন দামে ক্ষুব্ধ। বাজার মনিটরিং জোরদার করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভোক্তারা।
এফপি/ টিকে