পুতিন একজন কঠিন মানুষ, অনেককে বোকা বানিয়েছেন: ট্রাম্প

ইউক্রেন ইস্যুতে সমঝোতায় আসতে রাশিয়াকে ৫০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেটি না হলে মস্কোর ওপর ১০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি। তবে ট্রাম্পের এ ঘোষণা পুতিন প্রশাসনকে হতাশা নয়, বরং স্বস্তিই দিয়েছে বলে জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার বিষয়ে বড় সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেবেন তিনি। ট্রাম্পের এমন বক্তব্য ঘিরে শুরু হয় নানা জল্পনা। স্থানীয় সময় সোমবার (১৪ জুলাই) হোয়াইট হাউসে পশ্চিমা সামরিক জোট বা ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ ইস্যুতে বক্তব্য দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, পুতিনের ওপর অসন্তুষ্ট তিনি। ফোনালাপে পুতিন যুদ্ধ বন্ধের কথা বললেও, বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন তিনি। মস্কোকে ৫০ দিনের সময় বেঁধে দেন ট্রাম্প। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমঝোতায় না আসলে দেশটির ওপর শতভাগ সম্পূরক শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ভারত, চীন বা যেসব দেশ এখনো রুশ জ্বালানি কিনছে, তারাও এই শাস্তির আওতায় পড়বে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন,
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় তিন হাজার ৫০০ কোটি ডলার খরচ করেছে। আমরা চাই এ যুদ্ধ বন্ধ হোক। এটা আমার যুদ্ধ ছিল না। এটা ছিল বাইডেনের যুদ্ধ। আমি বিশ্বকে এই যুদ্ধ থেকে বের করে আনতে চাই।

আর ন্যাটো মহাসচিব এক সাক্ষাৎকারে জানান, ট্রাম্পের এই শুল্ক পরিকল্পনা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। কারণ এটি শুধু রাশিয়াকে নয়, বরং দেশটির বাণিজ্য সহযোগী চীন, ভারত, এমনকি ব্রাজিলকেও চাপ দেবে। তার মতে, সেইসব দেশ এখন পুতিনকে ইউক্রেন ইস্যুতে সমঝোতার জন্য চাপ দেবেন।

এরপর বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি এখন পুতিনকে আর বিশ্বাস করেন না। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের প্রতি এখনো পুরোপুরি আস্থা হারাননি বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘তার প্রতি আমি হতাশ। তবে তার সঙ্গে এখনো আমার কাজ বাকি আছে।’ পুতিনকে বিশ্বাস করেন কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি প্রায় কাউকেই বিশ্বাস করি না।’

পুতিন সম্পর্কে ধারণায় পরিবর্তন আনতে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া তাকে সহায়তা করেছেন বলেও জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন,
আমি ঘরে ফিরে ফার্স্ট লেডিকে (মেলানিয়া ট্রাম্প) বলেছিলাম, জানো আমি আজ ভ্লাদিমিরের (পুতিন) সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের মধ্যে দারুণ আলাপ হয়েছে। তা শুনে সে বললো, ওহ, সত্যি? কিন্তু এইমাত্র আরেকটি শহরে (ইউক্রেনের) হামলা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন,
আমি বলতে চাই না তিনি (পুতিন) একজন ঘাতক। কিন্তু তিনি একজন কঠিন মানুষ। বছরের পর বছর ধরে এটা প্রমাণিত। সে অনেক মানুষকে বোকা বানিয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, এনডিটিভি 

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সাভারে হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার Jul 16, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ইন্দোনেশিয়ার, নতুন শুল্ক ১৯ শতাংশ Jul 16, 2025
img
এবার আমাদের লক্ষ্য সংসদ ভবন : নাহিদ Jul 16, 2025
img
অ্যাশেজ খেলার জন্য যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত আর্চার Jul 16, 2025
img
কলাপাড়ায় ইউএনওর বদলিতে মিষ্টি বিতরণ Jul 16, 2025
img
সিলেবাস সংস্কারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউনিসেফের চুক্তি Jul 16, 2025
img
আবরার ফাহাদকে আসলেই ওরা মারতে পারে নাই, ডকুমেন্টারিটা দেখা শেষ করে স্তব্ধ হয়ে থাকলাম : সংস্কৃতি উপদেষ্টা Jul 16, 2025
কনার ডিভোর্স পেপারে দেখা গেল নুসরাত ফারিয়ার নাম Jul 16, 2025
img
বিরল ঘটনা, পবিত্র কাবাঘরের ঠিক উপরে সূর্যের অবস্থান Jul 16, 2025
img
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল শতবর্ষী কিংবদন্তি দৌড়বিদ ফৌজা সিংয়ের Jul 16, 2025
img
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে প্রাণ হারাল ১ জন Jul 16, 2025
img
দেশে কোনো হত্যাকাণ্ডই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কিংবা সাম্প্রদায়িকতার কারণে সংঘটিত হয়নি : পুলিশ সদর দপ্তর Jul 16, 2025
কুড়িগ্রামে শহীদ পরিবারের পাশে রিজভী, জানালেন আন্দোলনের পটভূমি Jul 16, 2025
img
নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলোকে ত্রুটি সংশোধনে ১৫ দিন সময় দিয়ে ইসির চিঠি Jul 16, 2025
img
জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ জুলাই দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত Jul 16, 2025
img
পার্বত্য এলাকায় একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে : সুপ্রদীপ চাকমা Jul 16, 2025
img
রাজশাহীতে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীসহ আটক ২০ জন Jul 16, 2025
img
রাজশাহীর বাগমারায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারাল এক যুবক Jul 16, 2025
img
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের নির্দেশ মাউশি’র Jul 16, 2025
img
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাঠে ছিলাম ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ প্লাটফর্মের ব্যানারে : ফরিদা আখতার Jul 16, 2025