ম্যাচ পাতানোর গুরুতর অভিযোগে মন্টেনেগ্রোর ক্লাব এফকে আর্সেনাল তিভাতকে ইউরোপিয়ান ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা। বুধবার (১৬ জুলাই) এই শাস্তির ঘোষণা করা হয়। একই অভিযোগে ক্লাবটির একজন খেলোয়াড় ও একজন কর্মকর্তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রয়টার্স
২০২৩ সালের জুলাইয়ে উয়েফা কনফারেনস লিগের বাছাইপর্বে আর্মেনিয়ার ক্লাব আলাশকের্টের বিপক্ষে আর্সেনাল তিভাতের ম্যাচের পর এই অভিযোগ ওঠে। প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্র করার পর ঘরের মাঠে আর্সেনাল তিভাত ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হেরে যায়। এই দুটি ম্যাচ নিয়েই ম্যাচ পাতানোর অভিযোগের ভিত্তিতে উয়েফা তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত শেষে উয়েফার ডিসিপ্লিনারি কর্তৃপক্ষ (সিইডিবি) আর্সেনাল তিভাতের বিরুদ্ধে এই কঠোর শাস্তির ঘোষণা করে। ২০২৪-২৫ মৌসুম থেকে ২০৩৪-৩৫ মৌসুম পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি মন্টেনেগ্রোর শীর্ষ লিগে দুবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া এই ক্লাবটিকে পাঁচ লাখ ইউরো জরিমানাও করা হয়েছে।
উয়েফা জানিয়েছে, আর্সেনাল তিভাত তাদের শৃঙ্খলা বিধিমালার ১১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে, যেখানে ‘সাধারণ আদর্শিক আচরণ’ এবং ‘ম্যাচ ও প্রতিযোগিতার নৈতিকতা রক্ষা’র কথা বলা হয়েছে। যদিও ম্যাচ পাতানোর ধরণ বা আর্থিক লেনদেনের বিস্তারিত উয়েফা জানায়নি, এই শাস্তি ফুটবলের সততা রক্ষায় উয়েফার কড়া অবস্থান তুলে ধরে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে আর্সেনাল তিভাতের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে ক্লাবের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও কঠোর শাস্তি দেয়া হয়েছে। আর্সেনাল তিভাতের খেলোয়াড় নিকোলা সেলেবিচ এবং কর্মকর্তা রানকো ক্রাগোভিচকে ‘ফুটবল-সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্মকাণ্ড থেকে আজীবন নিষিদ্ধ’ করা হয়েছে।
এছাড়াও, দেশের শীর্ষ লিগে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে গত বছর প্লে-অফ জেতা আর্সেনালের আরও তিন খেলোয়াড়কে শাস্তি দেয়া হয়েছে। তারা হলেন চেটকো মানোজলোভিচ, দুসান পুলেতিচ এবং রাদুলে জিভকোভিচ। তাদের প্রত্যেককে ১০ বছর করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উয়েফা আরও জানিয়েছে, আর্সেনাল তিভাতকে দেয়া শাস্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ফিফাকে অনুরোধ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে আলবেনিয়ার ক্লাব স্কেন্দেরবুকে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে এক যুগের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল উয়েফা। সেই শাস্তির পর আর্সেনাল তিভাতের এই শাস্তিই কোনো ক্লাবকে দেয়া উয়েফার সবচেয়ে বড় শাস্তি। এই কঠোর পদক্ষেপগুলি ফুটবল থেকে ম্যাচ পাতানো নির্মূল করার জন্য উয়েফার দৃঢ় অঙ্গীকারের ইঙ্গিত দেয়।
এফপি/টিএ