ভারত সরকারের মদদেই বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা কলকাতায় রয়েছেন বলে ইঙ্গিত করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম উল্লেখ না করে মোদী সরকারকে আক্রমণ করে মমতা বলেছেন, কয়েকজন অতিথিকে তো ভারত সরকার রেখে দিয়েছে। আমি কি তাতে বাধা দিয়েছি? দিইনি। তার কারণ রাজনৈতিক বিষয় আছে।
পার্শ্ববর্তী দেশ বিপদে পড়েছে বা ভারত সরকারের অন্য কোনো বিষয় আছে, কই এ নিয়ে তো আমরা কোনোদিন কিছু বলিনি। তাহলে আপনারা কেন ‘বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি’ এমন তকমা দিচ্ছেন?
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিউটাউনে এক অনুষ্ঠানে বাঙালি হেনস্থার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভারত সরকার তো আমাদের অতিথি হিসেবে কয়েকজনকে রেখেছে, আমি কি না বলেছি? আশ্রয়ের কারণ হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশ বিপদে পড়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, বাংলাদেশিদের নিয়ে যদি এতো সমস্যা হয়, তাহলে কিছু বাংলাদেশিকে ভারত সরকার অতিথি করে রেখেছে কেন? তাদের রাখা নিয়ে এখনও অবদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনো আপত্তি করেনি।
মোদী সরকারের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, ‘একজন ভারতীয়, দেশের যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। কিন্তু, বিভিন্ন রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই, বাংলাদেশি বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের নির্বাসন করার কথা বলা হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারতের ভিন রাজ্যগুলোয় বাংলাভাষীদের রোহিঙ্গা বলা হচ্ছে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির ফলে ভারতে আসা উদ্বাস্তুরা সবাই অবশ্যই ভারতের নাগরিক। বাংলাদেশি কোনোভাবেই নয়।’
মমতা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হচ্ছে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই রিপোর্ট করে দেওয়া হবে। ওরা জানে না, বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা এশিয়ায় দ্বিতীয়। আর বিশ্বে পঞ্চম।’
পশ্বিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির সময়েই বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তুরা ভারতে এসেছিল। ওই সময় যে উদ্বাস্তুরা ভারতে এসেছিলেন, তারা বর্তমানে ভারতের নাগরিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী অনেকেই দেশভাগের আগে এসেছেন বা ১৯৭১ সালে ভারতে চলে আসার আগে জন্ম হয়েছে। তাদের বাংলা ভাষায় টান রয়েছে। কিন্তু তারা বাংলাদেশি নন, সবাই ভারতীয়।’ তিনি বলেন, ‘বাংলায় বাংলাদেশি টান থাকতেই পারে। ওপার বাংলায় তারা ছিলেন এটা ভুলে গেলে চলবে না।’
টিকে/