অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না- এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্য অর্জনের জন্য নির্বাচনের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। সুতরাং আপনাদের আমাদের সবার কোনো আবেগ তাড়িত হয়ে কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ভবিষ্যতে আর যাতে কোনো চরমপন্থা ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের সুযোগ না পায়- এ জন্য মানুষকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর এক হোটেলে ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবদান ও শহীদদের স্মরণে’ শীর্ষক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। যুক্তরাজ্য থেকে অনলাইনে স্মরণসভায় যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
স্মরণসভায় তরেক রহমান বলেন, ‘কারও রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের একমাত্র মাধ্যম হওয়া উচিত জনগণের রায়। রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু নৃশংস ঘটনা অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। আশা করি, তারা আরও স্বচ্ছ ও সাহসী ভূমিকা রাখবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দলগুলো তাদের পাশে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন, ২০২৪ সালের শহীদরাও তেমনই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ১৬ জুলাইয়ের পর আর শুধু কোটার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তখন বিশ্বাস জন্মেছিল, মাফিয়া সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার। সেই বিশ্বাস থেকেই গণতান্ত্রিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে অংশ নেয়। এই আন্দোলন যেন একক দলের বলে পরিচিত না হয়, সেটি আমরা নিশ্চিত করেছি।’
তরেক রহমান আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে শহীদরা জাতির গৌরব। তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়েই তাদের প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো সম্ভব। আর তা শুরু হবে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। সেজন্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে।’
স্মরণসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখানে মঈন খান বলেছেন সংগ্রাম শেষ হয়নি। সামনে গণতন্ত্রের যে সংকট দেখা যাচ্ছে সেই সংকট থেকে উত্তরণ করতে হলে আমাদের অনেক সজাগ-সর্তক থাকতে হবে। আজ গণতন্ত্র উত্তরণের যে স্বপ্ন আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের আরও সজাগ হয়ে, আরও সর্তকতার সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে হবে।
অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম মিথিলের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, বিএনপির জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক এবং দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু হোরায়রা, গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনরা সহ আরও অনেকে।
ইউটি/টিএ