ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) ব্রেন্ট ক্রুড ও মার্কিন তেলের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। গ্যাসঅয়েল ফিউচার্স ছুঁয়েছে গত ১৭ মাসের সর্বোচ্চ অবস্থান। খবর আরব নিউজ
শুক্রবার সৌদি সময় দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৩ সেন্ট বা ১.০৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৭০.২৫ ডলার। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেলের দাম বেড়েছে ৮৩ সেন্ট বা ১.২৩ শতাংশ, যা গিয়ে ঠেকেছে ৬৮.৩৭ ডলারে।
কম সালফারযুক্ত গ্যাসঅয়েল ফিউচার্সের প্রিমিয়াম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭.২৭ ডলারে, যা ব্রেন্টের তুলনায় ৩.৫০ ডলার বেশি। ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালের পর এই হার সর্বোচ্চ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপে জ্বালানির স্বল্পতা এই বৃদ্ধির মূল কারণ।
রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের জবাবে ইইউ তাদের ১৮তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এতে রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে আরও কোণঠাসা করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জি৭ জোটের জন্য রাশিয়ার তেলের ক্রয়মূল্যের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭.৬ ডলার। এ ছাড়া, ইইউ এখন থেকে রাশিয়ান ক্রুড থেকে উৎপাদিত কোনো পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি করবে না। তবে নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও সুইজারল্যান্ড থেকে আসা পণ্য এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।
ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কায়া ক্যালাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ জানিয়েছেন, ভারতের সবচেয়ে বড় রোসহেফট শোধনাগারকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ বছর ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য মিলিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৯৬ হাজার ব্যারেল পরিশোধিত জ্বালানি আমদানি করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ডিজেল, গ্যাসঅয়েল এবং জেট ফুয়েল। ইউরোপ স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন ধরেই আমদানির ওপর নির্ভরশীল।
ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা এবং কম মজুতের কারণে বাজারে চাপ বেড়েছে।’ রাইস্ট্যাড এনার্জির উপ-সভাপতি জানিভ শাহ জানান, ‘ভারত থেকে সরবরাহ বন্ধ হলে ইউরোপের ডিজেল সংকট আরও প্রকট হবে।’
ইইউ’র নতুন নিষেধাজ্ঞায় এখনো সায় দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, যদি মস্কো ৫০ দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তিতে না আসে, তবে রাশিয়ার তেল কেনা দেশগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
কমার্জব্যাংকের বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এখন বাজার অপেক্ষা করছে- যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ কী হয় তা দেখার জন্য।’
রয়টার্স জানিয়েছে, ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চল থেকে তেল রপ্তানি এখনও শুরু হয়নি। যদিও বাগদাদ বলেছে, সরবরাহ তাৎক্ষণিক শুরু হবে। এই দোটানাও বাজারে মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কাজ করেছে।
কেএন/টিকে