ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই পরবর্তী টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল নিজেদের মাঠে আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে তাদের হতাশ করে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। একইসঙ্গে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী তিন ফাইনালেরই আয়োজক স্বত্ব দেওয়া হয়েছে প্রথম দুই আসরের হোস্ট ইংল্যান্ডকে।
গত মাসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই সময়ই ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড ইসিবি যে পরবর্তী ফাইনাল আয়োজনেরও দায়িত্ব পাবে সেই খবর দিয়েছিল দেশটির গণমাধ্যম। পরে এই সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে হওয়া আইসিসির বার্ষিক সাধারণ সভায় একই সিদ্ধান্তই এলো। টেস্ট চ্যাম্পিয়নের একটি চক্র চলে তিন বছর ধরে। সেই অনুসারে পরবর্তী চক্র ২০২৭, ২০২৯ ও ২০৩১ সালের ফাইনাল আয়োজন করবে ইংল্যান্ড।
এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ফাইনাল হয়েছিল ২০২১ সালে (সাউদাম্পটনে), এরপর ২০২৩ (দ্য ওভাল) এবং ২৫ (লর্ডস) সালের তিনটি ফাইনালই হয়েছে ইংল্যান্ডে। ভারতকে ২০২৭ টেস্ট ফাইনালের দায়িত্ব না দেওয়া প্রসঙ্গে আইসিসির ব্যাখ্যা– ‘সাম্প্রতিক ফাইনালেই আয়োজক হিসেবে ইসিবির সফল ট্র্যাক রেকর্ড’ দেখা গেছে।
এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুই আসরে ফাইনাল খেললেও রোহিত শর্মার দল ভারতের স্বপ্নভঙ্গ হয়। এবার তৃতীয় আসরে তারা আর ফাইনালে উঠেনি, একইসঙ্গে ফাইনাল আয়োজনের স্বত্ব চেয়েও ফিরতে হচ্ছে হতাশ হয়ে।
ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গুল্ড বলেন, ‘পরবর্তী তিনটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজক স্বত্ব পাওয়ায় আমরা অনেক আনন্দিত।
এখানে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভক্তদের আবেগ এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খেলা দেখতে আসার বিষয়টি স্বীকৃতি পেয়েছে আইসিসির এই সিদ্ধান্তে। ফাইনাল আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়া বড় প্রাপ্তি এবং পরবর্তী আসরগুলোর মতোই আমরা আইসিসির সঙ্গে সফলভাবে ফাইনাল উপহার দেওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।’
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, ইংল্যান্ডের গ্রীষ্ম মৌসুম চলে জুন মাসে। ওই সময়ে ফাইনাল আয়োজনের ব্যাপারে বেশ আগ্রহী আইসিসি। বিশেষ করে আইপিএল আসর শেষ হওয়ার পরপরই জুনে খুব কম দলেরই আন্তর্জাতিক সূচি থাকে। লর্ডসে গত মাসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে সেখানকার টিকিট বিক্রি ও ব্যাপক দর্শক উপস্থিতি বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। এসব বিষয় লাল বলের শিরোপানির্ধারণী ম্যাচ আয়োজনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলেছে ইংল্যান্ডকে।
ইংল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচের গ্রহণযোগ্যতা এবং দর্শকদের ব্যাপক উপস্থিতি সর্বমহলে প্রশংসা পেয়েছে। এ ছাড়া নিরপেক্ষ হিসেবে ম্যাচ আয়োজন করলেও গ্যালারি ভর্তি করার সামর্থ্যের কারণে কৃতিত্ব পায় ইসিবিও। অন্য কোনো দেশে ফাইনাল আয়োজন করার পর স্বাগতিক দল সেই ম্যাচে না থাকলে দর্শকদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যায়।
লর্ডসের সর্বশেষ ফাইনালে দর্শকদের গ্যালারিতে সরব অবস্থান ও পুরো আবহে মুগ্ধ হন আইসিসি সভাপতি জয় শাহ। পরবর্তী আসরগুলোর ফাইনালও লর্ডসে হবে কি না সেটি অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
এমআর/টিকে