নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মহসিন মিয়াকে (৪৬) ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পিবিআই সদর দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আসামি মহসিন মিয়াকে ইন্টারপোলের রেড এলার্টের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে দুবাই পুলিশ। পরে দুবাই পুলিশের বার্তা পেয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে হারুনুর রশিদ খানের শিবপুরের বাড়িতে ঢুকে গুলি করা হয়। ৯৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় তার ছেলে আমিনুর রশিদ খান ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
আসামিরা হলেন শিবপুরের কামারগাঁও এলাকার আরিফ সরকার, ইরান মোল্লা ও হুমায়ুন, পূর্ব সৈয়দনগরের মহসিন মিয়া, মুনসেফেরচরের মো. শাকিল ও নরসিংদী শহরের ভেলানগরের গাড়িচালক নূর মোহাম্মদ।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের আগের দিন রাতে আসামি আরিফ সরকার একটি বিদেশি নম্বর থেকে হারুনুর রশিদকে কল করে বলেন, বিদেশে চলে এসেছি। মহসিন মিয়া মসজিদের জন্য অনুদান দিতে কিছু টাকা নিয়ে আপনার কাছে যাবে। হারুনুর রশিদ তাকে পরদিন সকালে পাঠাতে বলেন। সেই অনুযায়ী মহসিন দুজনকে নিয়ে তার বাসার যায়। হারুনুর রশিদ তাদের ড্রয়িংরুমের সোফায় বসিয়ে নাস্তা আনতে উঠে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মহসিনের সঙ্গে আসা দুই শুটার কোমরে গুলি করেন। পরে তিনজন মোটরসাইকেলে চেপে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে একটি প্রাইভেট কারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত হয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যান।
ঘটনার পরপরই গাড়িচালক নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রসহ ফরহাদ হোসেন (৩৪) ও আরিফুল ইসলামকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। পিবিআই মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামি জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
এ ছাড়া আসামি আরিফ, মহসিন ও হুমায়ুনের অবস্থান নিশ্চিত করে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়। পরে আসামি আরিফ ও মহসিনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে রেড নোটিশ জারির পর ২১ মে দুবাই পুলিশ মহসিনকে গ্রেপ্তার করে। গত ১৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশের একটি দল দুবাই গিয়ে তাকে নিয়ে ২০ জুলাই দেশে ফেরেন। আসামি মহসিন ইতিমধ্যে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) এস এম মোস্তাইন হোসেন বলেন, হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।