এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, দিন যত যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে হতাশা বাড়ছে। তারা যদি সতর্ক না হয় এবং ক্রমান্বয়ে বিতর্কিত হতে থাকে, তাহলে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সংশয় আরও বাড়বে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় বাকলিয়া থানাধীন এলাকায় এক কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রামে জুলাই অভ্যুত্থান উদযাপন উপলক্ষে গণপ্রতিজ্ঞা ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করেছে এবি পার্টি।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের অর্জন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যদি অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয় এবং বিভেদ সৃষ্টি করে, তাহলে তরুণদের পক্ষে বিপ্লবের ডাক দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, এবি পার্টির রাজনীতি হলো উন্নত, সমৃদ্ধ ও অধিকারভিত্তিক বাংলাদেশ গঠনের রাজনীতি। আমরা বিশ্বাস করি- বাংলাদেশ যদি তার মেধা, সম্পদ ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারে, তবে বিশ্বের কোনো শক্তিই আমাদের চোখ রাঙাতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, মানুষ অসুস্থ হলে যেমন হুজুরের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র না নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়, তেমনি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণেও দরকার বাস্তবভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব। এবি পার্টি সেই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে।
বাংলাদেশের কৃষক, শ্রমিক, তরুণ ও ছাত্রদের উদ্দেশে মঞ্জু বলেন, এই দেশ এক সময় উন্নত ছিল। ব্রিটিশরা ব্যবসার নামে এসে আমাদের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে এবং সেই সম্পদে তারা সমৃদ্ধ হয়েছে। আজ আমাদের সেই দেশেই কাজ করতে যেতে হয়। কিন্তু আমরা যদি জেগে উঠি, আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ শুধু সিঙ্গাপুর নয়, আমেরিকাকেও উন্নয়নের দিক থেকে পেছনে ফেলবে। এ দেশে গড়ে উঠবে আধুনিক প্রযুক্তির কারখানা ও উন্নত গাড়ি তৈরির শিল্প।
তিনি বলেন, সামাজিক ঐক্য ও আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনকারী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ছিদ্দিকুর রহমান চট্টগ্রাম ও এই অঞ্চলের উন্নয়নে একটি বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কৌশল নিয়ে কাজ করছেন। এই কৌশল বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের চেহারা পাল্টে যাবে এবং নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম-৯ (বাকলিয়া-চকবাজার-কোতোয়ালী) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ বঙ্গোপসাগরের অভিভাবক হলেও তারা এর সুফল থেকে বঞ্চিত। এবি পার্টির ‘বাংলাদেশ ২.০’ রূপরেখার মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীকেন্দ্রিক নগর সম্প্রসারণ ও ‘সিটি গভর্নমেন্ট’ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। চট্টগ্রামের ন্যায্য হিস্যা ফেরত দিতে হলে ঈগল প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে।
“জুলাই শহীদদের স্মরণে এবং বাংলাদেশ ২.০ গঠনে গণপ্রতিজ্ঞা ও গণসংযোগ এবং রাজনৈতিক কার্যালয় উদ্বোধন” শীর্ষক এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাকলিয়া থানা এবি পার্টির সহ-সমন্বয়ক মোহাম্মদ আজগর (আকবর)। সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম মহানগর এবি যুব পার্টির সমন্বয়ক আব্দুর রহমান মনির।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. গোলাম ফারুক, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মো. দিদারুল আলম (পিএসসি), কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবুল কাশেম, মহানগর অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার যায়েদ হাসান চৌধুরী, হেলাল উদ্দিন, এরশাদ, মোহাম্মদ জাবেদ, সবুজ, রবিন, বাসের, হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
এ ছাড়া বাকলিয়া থানার আওতাধীন বিভিন্ন ওয়ার্ডের সংগঠক, কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
কেএন/টিএ