আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিস দখলের মতো প্রক্রিয়া কোনো সভ্য দেশে করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আব্দুন নূর তুষার। সম্প্রতি মাসুদ কামাল সঞ্চালিত ‘অন্য মঞ্চ’ নামক একটি আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
আব্দুন নূর তুষার বলেছেন, ‘কেউ যদি ক্রিমিনালও হয়, কোনো সংগঠন যদি ক্রিমিনাল সংগঠন হয়, এই ধরনের সম্পত্তির অধিকার নিতে গেলে এটাকে কোর্টের মাধ্যমে আসতে হবে। আইনি লড়াই করতে হবে।
বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ পেতে হবে এবং তার পেছনে যথেষ্ট পরিমাণে যুক্তিতর্ক থাকতে হবে। যদি আদালত এটাকে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দেন, এটা নিয়ে আপিলে যাওয়া যাবে। মানে এটা একটা দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট, যে সংগঠন সম্পূর্ণ ভূঁইফোড়, যাদের আমরা কেউ চিনি না।
অথচ এটা একটা ইনস্টিটিউট। তার মানে এটা শুধু একটা প্রতিষ্ঠানই নয়, এখানে কিছুটা গবেষণা হয়। কিছুটা শিক্ষাদান হয়। কিছুটা পাঠদান হয়।
এটার নিজেরই তো একটা ঠিকানা থাকার কথা। মানে সে তো এই বাড়িটা দখল করেই প্রথমে এটা বানাচ্ছে না। নিশ্চয়ই ইনস্টিটিউটটার একটা ঠিকানা আছে। এটার নিশ্চয়ই রেজিস্ট্রেশন আছে। এটা নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও থেকে অনুমতি আছে।
সেগুলা কিছু না থাকলে এ রকম একটি প্রক্রিয়াকে আমরা ধরে নেব যে এটা দখলপ্রক্রিয়া। এটা দখল করা হচ্ছে। এখন কোনো সভ্য দেশে করা যায় না। কোনো সভ্য সমাজেও এটা করা যায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আপনি যদি একটা গ্রামে ঢুকে কোনো একটা জমিতে কিছু করতে শুরু করেন, প্রতিবেশীরা প্রশ্ন করবে, আপনি জমিতে কিভাবে এলেন? আপনি কি এটা কিনেছেন? নাকি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন? নাকি কেউ দান করেছে? নাকি এটা খাসজমি? সরকার অনুমোদন দিয়েছে? আপনি পারবেন না। একটা জলাভূমিও আপনি নিতে পারবেন না। এভাবে বাংলাদেশের আইনে রয়েছে।’
আব্দুন নূর তুষার বলেন, ‘সেখানে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে এত বছর ধরে বৃহৎ একটা রাজনৈতিক দল ব্যবহার করছে, যদিও তার কার্যক্রম এখন স্থগিত বা ভবিষ্যতে তারা কার্যক্রম করতে পারবে কি না, সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু সম্পত্তিটা তো তাদের। কেউ ধরেন, মরে গেলে তার সম্পত্তি দখল করা না। কেউ যদি নির্বাসনে চলে যায় তাহলে তার সম্পত্তি দখল করা না যায়। বহু বছর আগে যারা এখানে সম্পত্তি ফেলে ভারতে বা পাকিস্তানে চলে গিয়েছেন, তাদের সম্পত্তি নিয়েও যদি নানা রকম আপত্তি থাকে বা অধিকারের লড়াই থাকে, তাহলে এটা তো আমি মনে করি যে অত্যন্ত গর্হিত কাজ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা প্রমাণ করে দিচ্ছে যে বর্তমানে যে প্রশাসন আছে এই প্রশাসন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। এই প্রশাসন আসলে ত্রিচারী। এটা দ্বিচারিতাও বলব না। একদিকে তারা ন্যায়নীতি আন্তর্জাতিক আইনের কথা বলেন। আরেক দিকে তারা এনসিপি এবং কিছু দলকে একেবারে প্রকাশ্য পক্ষপাত করেন। আরেক দিকে তারা দেশের যে আইনের শাসন এবং দেশের যে সংবিধান, অন্য বিষয়গুলো আছে সেগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। এ রকম লুটপাট, ভাঙচুর, সম্পত্তি দখল ভুয়া অর্গানাইজেশনের পেছনে দাঁড়িয়ে যাওয়া এগুলো তারা করছেন। এটা এক ধরনের ত্রিচারিতা। যেমন ধরেন এনসিপি নিবন্ধন নেই। তারা এটার পেছনে দাঁড়িয়েছে। এই ইনস্টিটিউটের কোনো ঠিকানা নেই। এটাকে কেউ বাধা দিচ্ছে না।’
পিএ/টিকে