ইকুয়েডরে বারে বন্দুকধারীদের হামলায় শিশুসহ প্রাণ গেল ১৭ জনের

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের একটি বারে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী এক শিশুও রয়েছে। মাদক-সন্ত্রাসে জর্জরিত দেশটিতে এটি সর্বশেষ ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনা।

সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রোববার রাতে গুয়ায়াস প্রদেশের এল এমপালমে শহরের ‘লা ক্লিনিকা’ নামের একটি বারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর জানিয়েছে, হামলায় আরও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মেজর অস্কার ভ্যালেন্সিয়া বলেন, দুইটি পিকআপ গাড়িতে করে আসা বন্দুকধারীরা পিস্তল ও রাইফেল দিয়ে বারে উপস্থিত সবাইকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এরপর পালিয়ে যাওয়ার সময় আরও একটি দলের ওপর গুলি চালায় তারা।

তিনি আরও জানান, নিহত শিশুটি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক কিলোমিটার দৌড়েছিল। পরে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা একাধিক মরদেহ রাস্তার পাশে পড়ে আছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৪০টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

ভ্যালেন্সিয়া বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, হামলাকারীরা ‘অ্যাকটিভ উলভস’ বলে চিৎকার করেছিল— যা স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের নাম হতে পারে, যারা মাদক পাচারের রুট নিয়ন্ত্রণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

গুয়ায়াস অঞ্চলটি মাদক চোরাকারবারিদের সহিংসতার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেই একই প্রদেশের প্লায়াস শহরে একটি বারে পুল খেলার সময় ৯ জন নিহত হন। পুলিশ বলেছে, ওই ঘটনায় নিহতরা মূলত ‘আশপাশের নিরীহ মানুষ’, তারা আসল লক্ষ্য ছিল না।

সাংগঠনিক অপরাধ দমনে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া গত বছর অভিযান শুরু করেন। এরপর থেকে দেশটি লাতিন আমেরিকার অন্যতম সহিংস দেশে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে প্রতি লাখে হত্যার হার ছিল ৩৮ জন।

সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ইকুয়েডরে ৪ হাজার ৫১টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। একইসঙ্গে বিশ্বের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কোকেন ইকুয়েডর হয়ে পাচার হয় বলেও জানিয়েছে সরকারি সংস্থাগুলো।

কেএন/টিকে


Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রথমবারের মতো মাতৃত্বের আনন্দে ভাসছেন অহনা Jul 29, 2025
img
‘বিগ বস’-এ যাচ্ছেন না মল্লিকা শেরাওয়াত, গুজব উড়িয়ে দিলেন খোদ নিজেই Jul 29, 2025
img
হৃতিক-কিয়ারার ফ্ল্যাশব্যাক রোমান্স, আসছে ওয়ার ২-এর প্রথম গান Jul 29, 2025
img
কেকেআরের সঙ্গে পথচলা শেষ, বিদায় চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের Jul 29, 2025
img
সংস্কার গভীর না হলে আবারও স্বৈরাচার আসতে পারে : প্রধান উপদেষ্টা Jul 29, 2025
img
তামিম একজন মেগাস্টার : হামজা চৌধুরী Jul 29, 2025
img
বর্তমান সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত মামলাগুলোর রায় পাওয়া যাবে: আসিফ নজরুল Jul 29, 2025
img
ছেলের সেঞ্চুরির পর নির্বাচকদের সমালোচনা করেছে ওয়াশিংটনের বাবা Jul 29, 2025
img
সংস্কার প্রস্তাবনা দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে একমত বিএনপি Jul 29, 2025
img
তাসকিনের ঘটনার পর নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে বিসিবি Jul 29, 2025
img
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগে স্থবিরতা, সুদহার অপরিবর্তিত Jul 29, 2025
img
সাকিব একজন আইকন : হামজা চৌধুরী Jul 29, 2025
img
ভারতের ম্যাচে পাকিস্তানের জার্সি পরে আসায় দর্শক হেনস্তা Jul 29, 2025
img
গোলাপি বলের প্রস্তুতি ম্যাচে পিএম’স ইলেভেনের মুখোমুখি ইংল্যান্ড Jul 29, 2025
img
‘বাংলাদেশ সিরিজের মতো খেললে এশিয়া কাপেও খারাপ করবে পাকিস্তান’ Jul 29, 2025
img
রাহাকে নিয়ে মাতৃত্বের যাত্রায় আলিয়া, মেয়ের প্রশংসায় মহেশ ভাট Jul 29, 2025
img
জুলাই সনদে শেখ হাসিনার নাম না থাকা মেনে নেওয়া যায় না : ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব Jul 29, 2025
img
বিসিসিআইয়ের অফিসে সাড়ে ৬ লাখ টাকার জার্সি চুরিতে গ্রেপ্তার নিরাপত্তারক্ষী Jul 29, 2025
img
আকাশ থেকে ফিলিস্তিনে খাবার-ওষুধ ফেলছে ফ্রান্স Jul 29, 2025
img
‘সাইয়ারা’ মানে কী? সিনেমা দেখে উত্তর খুঁজছেন দর্শকরা Jul 29, 2025