ইসরায়েলের অবরোধের মুখে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়া ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্য ও জীবনরক্ষাকারী জরুরি ওষুধ ফেলার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার ফরাসি এক কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনের এই ভূখণ্ড দ্রুত দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যদিও বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) বলেছে, দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি এখন গাজা উপত্যকায় চলমান। এই উপত্যকায় ব্যাপক ক্ষুধা, অপুষ্টি এবং রোগব্যাধির সঙ্গে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের ২২ মাসে গাজা উপত্যকায় ক্ষুধা ও খাদ্যসংকট নিয়ে গত এক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
কূটনৈতিক ওই সূত্র বলেছে, গাজার বেসামরিক জনগণের সবচেয়ে জরুরি ও মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য ফ্রান্স আগামী দিনগুলোতে আকাশ থেকে উপত্যকায় ত্রাণ ফেলবে। এ সময় গাজাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
তবে আকাশপথে ত্রাণ পাঠানোর এই কার্যক্রমকে কোনোভাবেই স্থলপথের অধিক কার্যকর ও নিয়মিত ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হিসেবে দেখা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছে সূত্রটি। গাজা উপত্যকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর জন্য স্থলপথের সব সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট দ্রুত খুলে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স।
সূত্রটি বলেছে, ফ্রান্স স্থলপথে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্যও কাজ করছে। কারণ এটাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এই পথে গাজায় বিপুল পরিমাণ ও বাধাহীনভাবে জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, গাজার ২০ লাখেরও বেশি মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষুধা ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে সম্প্রতি কিছুসংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাককে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল।
এদিকে, সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্জ বলেছেন, জর্ডানের সঙ্গে যৌথভাবে গাজায় আকাশপথে ত্রাণ পাঠাবে জার্মানি। তারা ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
টিএ/