২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিতর্ক থাকায় এসব নির্বাচন পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করেছে সরকার৷
আজ (বুধবার) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে৷ এতে সই করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ৷
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে এবং এসব নির্বাচনে নানা কৌশলে জনগণের ভোট প্রদানের অধিকার ভূলুন্ঠিত করে সাজানো প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ দলকে নির্বাচিত করার জোরালো অভিযোগ রয়েছে সেহেতু বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে পর্যালোচনাপূর্বক ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য The Commissions of Inquiry Act, 1956 (Act No.VI of 1956) এর আওতায় সরকার নিম্নরূপে কমিশন গঠন করিল:-
• বিচারপতি শামীম হাসনাইন, সাবেক বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগ- সভাপতি
• শামীম আল মামুন, সরকারের সাবেক গ্রেড-১ কর্মকর্তা- সদস্য
• কাজী মাহফুজুল হক (সুপণ) সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়- সদস্য
• ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন, অ্যাডভোকেট, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা - সদস্য
• ড. মোঃ আব্দুল আলীম, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ- সদস্য।
প্রজ্ঞাপনে কমিশনের কার্যপরিধির বিষয়ে বলা হয়েছে—
ক) বিগত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনসমূহ বিষয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষক, দেশি ও বিদেশি তদারকি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ বিশ্লেষণ;
(খ) এসব নির্বাচনের বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগ এবং সার্বিকভাবে উল্লিখিত বিষয়সমূহের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ ও বিশ্লেষণ;
(গ) এসব নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ সীমাবদ্ধ করতে ও জনগণের ভোটাধিকার প্রদান বাধাগ্রস্ত করতে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ও সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা বিশ্লেষণ;
ঘ) নির্বাচনসমূহে তৎকালীন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ;
(ঙ) নির্বাচন কার্যক্রমে আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ;
(চ) তৎকালীন নির্বাচন কমিশনসমূহের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগসমূহ যাচাই ও অনুসন্ধান;
(ছ) বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উল্লিখিত নির্বাচনসমূহে অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ;
(জ) ভবিষ্যতের সকল নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও মানসম্পন্ন পর্যায়ে উপনীত করার লক্ষ্যে সুচিন্তিত সুপারিশ প্রদান; এবং
(ঝ) প্রয়োজনে যে কোনো দপ্তরের দলিল দস্তাবেজ তলব করা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে— কমিশন বাংলাদেশের যে কোনো স্থান পরিদর্শন, যে কোনো দপ্তরের দলিল দস্তাবেজ তলব এবং সন্দিগ্ধ যে কোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারবে।
* কমিশন, The Commissions of Inquiry Act, 1956 এর Section 4 এবং Section 5 এর Sub-Section 2, 3, 4, 5 ও 6 এর উল্লিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
কমিশন, The Commissions of Inquiry Act, 1956 অনুসারে তদন্তকার্য সম্পন্ন করিয়া আগামী ৩১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখের মধ্যে সরকারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন লজিস্টিক ও তথ্য সহায়তা প্রদান করিবে।
এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।