তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে এসে প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো। বিশেষত, সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) ও সৌদি আরব তাদের বিশাল তেল-সম্পদের পরিবর্তে এখন বাজি ধরেছে 'কম্পিউট' তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও ডেটা ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ওপর।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফরের সময় ঘোষণা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় AI ক্যাম্পাস নির্মাণের। এই ‘Stargate’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এমিরাতি রাষ্ট্র-সমর্থিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান G42। যুক্তরাষ্ট্রের এনভিডিয়া (Nvidia) সরবরাহ করবে AI চিপ, যুক্ত থাকবে মাইক্রোসফট, সিসকো, ওরাকল এবং জাপানের সফটব্যাংক।
বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, “আগে যেমন তেল বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তি ছিল, এখন AI এবং কম্পিউট সেই ভূমিকায়।” UAE এবং সৌদি আরবের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ফান্ড যেমন Public Investment Fund (PIF) এবং Mubadala, শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে ডেটা সেন্টার, AI মডেল ও চিপ নির্মাণে।
UAE-র খাজনা (Khazna) ইতোমধ্যেই ২৯টি ডেটা সেন্টার পরিচালনা করছে। তাদের লক্ষ্য দেশটিকে একটি বৈশ্বিক AI ও ডেটা হাবে রূপান্তর করা। AI ও প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এখন উপসাগরীয় দেশগুলোকে ‘Team America AI’-এর অংশ করে তুলতে চায়। এর ফলে কিছু চীন-সমর্থিত প্রকল্প বাতিল বা সীমিত করা হয়েছে UAE-তে, হুয়াওয়ের হার্ডওয়্যার নির্ভরতাও কমানো হচ্ছে।
তবে এক চ্যালেঞ্জ রয়েই গেছে দক্ষ AI গবেষক ও ট্যালেন্ট। তাই ‘গোল্ডেন ভিসা’, করছাড় ও সহজ নিয়মকানুনে বিদেশি প্রতিভাকে টানার চেষ্টা করছে UAE। যদিও এখনো পর্যন্ত OpenAI, DeepSeek বা Mistral-এর মতো বিশ্বখ্যাত কোনো প্রতিষ্ঠান এখান থেকে গড়ে ওঠেনি। মধ্যপ্রাচ্যের এই AI বিপ্লব শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়। এটি বিশ্ব কূটনীতিতে একটি বড় মোড়। তেল যেখানে ছিল অতীতের সম্পদ, সেখানে এখন কম্পিউট, চিপ, এবং তথ্যই ভবিষ্যতের সম্পদ।
ইউটি/টিএ