আন্তর্জাতিক মর্যাদার প্রতি আকাঙ্ক্ষা, ওবামার সাথে দশকব্যাপী প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং সম্ভবত কিছুটা উস্কানি; নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচ্ছন্নতার পেছনে এমন কয়েকটি বিষয় কাজ করে থাকতে পারে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট ৩১ জুলাই সাংবাদিকদের বলেই ফেলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার দেয়ার সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তার এই কথা শুনে ট্রাম্পের বিরোধীরা অনেকেই মুখ টিপে হেসেছেন।
লিভিট বলেন, ২০ জানুয়ারী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতি মাসে গড়ে একটি শান্তি চুক্তি বা যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন।
যেমন, ভারত ও পাকিস্তান; কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড; মিশর ও ইথিওপিয়া; রুয়ান্ডা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি); সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে শান্তি প্রস্তাব।
লেভিট এ সময় ইরানের কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে ট্রাম্প ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। লিভিটের দাবি, বিশ্ব শান্তিতে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অবদান রেখেছে।
তিনি ইউক্রেনের সংঘাতের কথা উল্লেখ করেননি, যা ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
অথবা গাজার যুদ্ধের কথাও উল্লেখ করেননি, যা চলমান এবং যার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করে।
এর আগে পাকিস্তান ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নে সুপারিশ করেছিল, যেমনটি করেছিলেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
জুলাইয়ের গোড়ার দিকে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে, একজন সাংবাদিক লাইবেরিয়া, সেনেগাল, মৌরিতানিয়া, গিনি-বিসাউ এবং গ্যাবনের প্রেসিডেন্টদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে ট্রাম্প কি এই পুরস্কারের যোগ্য?
আফ্রিকান নেতাদের কাছ থেকে আসা ‘তোষামোদপূর্ণ’ প্রতিক্রিয়ায় হাসি ফুটেছিল ট্রাম্পের ঠোঁটে।
একজন ইসরাইলি-আমেরিকান, আইনের অধ্যাপক আনাত অ্যালন-বেক ট্রাম্পের নাম কমিটির পাঁচ সদস্যের কাছে জমা দিয়েছেন।
কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ ল-এর সহকারী অধ্যাপক একটি বার্তা সংস্থাকে বলেন, তিনি গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার অসাধারণ নেতৃত্ব এবং কৌশলগত প্রতিভার কারণেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভিন্ন কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
মার্কিন ইতিহাস ও রাজনীতি গবেষক এমা শর্টিস সংবাদ সাইট দ্য কনভার্সেশনে লিখেছেন, ‘নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনীত করা কুকুরের শোতে হায়েনা প্রবেশের মতো। অবশ্যই ট্রাম্প এর যোগ্য নন।’
এদিকে, আরেক মার্কিন অধ্যাপক গ্যারেট মার্টিন বার্তা সংস্থাকে বলেন, ট্রাম্প এমন একজন ব্যক্তি যিনি বিশেষভাবে প্রশংসা এবং পুরষ্কারের প্রতি অনুরাগী। তাই তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে স্বাগত জানাবেন।
গ্যারেট আরও বলেন, ১০ বছর আগে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার শুরু থেকেই, নিজেকে বারাক ওবামার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন ট্রাম্প। ওবামা ২০০৯ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার জিতেছিলেন।
সূত্র: জিও নিউজ
এমআর/টিএ