বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে কলকাতায়। সম্প্রতি দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে ৮ জন যুবককে আটক করে। তাদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত কিছু নথি ছিল বাংলায় লেখা। এই নথি অনুবাদের জন্য ট্রান্সলেটর চেয়ে একটি চিঠি পাঠায় দিল্লি পুলিশ। সেখানেই বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করা হয়। আর এতেই বাঙালি সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের একটি সরকারি চিঠিতে এই ভাষাগত তকমা ঘিরে এবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।
এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী রূপম ইসলামসহ একাধিক বিশিষ্টজন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন কৌশিক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে কৌশিক লেখেন, ‘বাংলা ভাষা আমার প্রিয় বিষয় শুধু নয়, আট বছর ধরে আমি বাংলা ভাষায় শিক্ষকতা করেছি। ‘বাংলাদেশি ভাষা’র টেক্সট বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব আছে বলে জানতাম না। সেই ভাষা অনুবাদ না করলে তদন্ত বিঘ্নিত হচ্ছে—এই চিঠিতে পড়লাম।’
তিনি আরও লেখেন, ‘দিল্লিতে অজস্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলা ভাষার বহু শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক রয়েছেন। প্রশাসন কি তাঁদের সাহায্য নিতে পারে না? উইলিয়াম কেরি বাংলা ভাষা প্রাণ দিয়ে শিখেছিলেন বাংলার আত্মা বুঝতে। আজকের প্রশাসন বাংলা বিষয়ে অসচ্ছ হলে সাহায্য নিন। নইলে প্রশাসনিক চিঠিতে এই অজ্ঞতা বারবার সামনে আসবে।’
সবশেষে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘বাংলা ভাষা থেকে হাজারটা আঞ্চলিক উপভাষা তৈরি হলেও টেক্সট একমাত্র বাংলা। ধন্যবাদ।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় কৌশিকের এই পোস্ট ঘিরে সাধারণ মানুষও নিজেদের মতামত জানাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ কিংবা ভারতের অন্য প্রান্তে শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলায় যেভাবে মানুষকে বারবার হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে, তা সত্যিই দুঃখজনক বলেই মনে করছেন অনেকে।
এসএন