বলিউডে মিস্টার পারফেকশনিস্ট নামে পরিচিত আমির খান। কারণ, অভিনয় করতে গিয়ে নিখুঁতভাবে চরিত্রে ঢুকে পড়েন। 'তারে জামিন পর', 'পিকে'-র মতো ছবিতে তার অভিনয় যেমন মুগ্ধ করেছে দর্শকদের, তেমনই 'দঙ্গল' সিনেমায় অভিনয় ও শারীরিক রূপান্তর দুটোই ছিল নজরকাড়া।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দঙ্গল’-এ কুস্তিগীর মহাবীর সিং ফোগাটের চরিত্রে অভিনয় করেন আমির খান। এক সময়ের পেশিবহুল কুস্তিগীর থেকে পরবর্তীকালে মোটা, বয়সকালে পৌঁছে যাওয়া এই চরিত্রের জন্য নিজের শরীরকে সম্পূর্ণ বদলে ফেলেন। প্রথমে প্রায় ২৫ কেজি ওজন বাড়িয়ে নেন, পরে আবার সেই অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আমির জানান, তিনি নিজেই পরিচালক নীতেশ তিওয়ারির কাছে অনুরোধ করেন যেন প্রথমে বয়স্ক মহাবীরের অংশগুলো শ্যুট করা হয়। কারণ, তখন শরীরে মেদ থাকলেও সমস্যা হবে না। পরে ধাপে ধাপে ওজন কমিয়ে তরুণ কুস্তিগীরের অংশে পৌঁছনো যাবে।
তিনি বলেন, আমি কোনও বডি স্যুট পরতে চাইনি। বাস্তবেই ওজন বাড়িয়ে সেই চেহারায় অভিনয় করেছি।
প্রথমে ওজন বাড়ানোটা বেশ উপভোগ্য ছিল। যা খুশি খাওয়া, বিশ্রাম, সবই ছিল তখনকার রুটিনে। কিন্তু শরীরের পক্ষে তা ছিল কষ্টকর। কুস্তির প্রশিক্ষণ নিতেও সমস্যা হত।
আমির বলেন, ওজন বাড়লে শ্বাস নেওয়ার ধরন বদলে যায়, হাঁটাচলার স্টাইল, এমনকি বসার ভঙ্গিও পাল্টে যায়।
কীভাবে কমালেন ২৫ কেজি?
ওজন এক সময় দাঁড়ায় ৯৭ কেজিতে, শরীরের ফ্যাট পার্সেন্টেজ ছিল ৩৮%। সেখান থেকে প্রায় ২৫ কেজি কমিয়ে ৯.৬% ফ্যাটে ফিরে আসেন। কঠোর ডায়েট, স্ট্রেন্থ ট্রেনিং, ফাংশনাল ওয়ার্কআউট, কার্ডিও, সব মিলিয়ে ছিল কড়া ফিটনেস রুটিন।
অভিনেতা বলেন, প্রথমে নিজেকে নিয়ে সন্দেহ হয়েছিল। ভাবছিলাম পারব কি না। কিন্তু নিজেকে হতাশ হতে দিইনি। প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়েছি। এক সময় এসে দেখলাম শরীর নিজেই বদলে যাচ্ছে।
তার ট্রেনাররাও জানান, অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিতে চাইতেন আমির। কিন্তু কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি। বরং সেই চ্যালেঞ্জই তাঁকে সাহস দিয়েছে।
পরিচালক নীতেশ তিওয়ারিও আমিরের এই নিষ্ঠা দেখে অভিভূত হন। শ্যুটিং শেষ হওয়ার সময় অভিনেতা নিজেও নিজের ট্রান্সফরমেশন দেখে গর্ব অনুভব করেন।
এসএন