বাড়ির চৌহদ্দির বাইরে কি কখনও ‘সুখ’ বসত গড়ে? পরিবার ছাড়াও কি কোথাও শান্তির ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়? এমন সব প্রশ্ন নিয়ে টলিউডে আসছে এক অন্যধারার ছবি- ‘নৈবেদ্য’। পরিচালক কৌশিক সেনগুপ্তর এই নতুন প্রয়াসে উঠে এসেছে সম্পর্কের জটিলতা, বিসর্জনের বেদনা আর নতুন করে গড়ে ওঠা সহানুভূতির আশ্রয়।
‘নৈবেদ্য’-র গল্প আবর্তিত হয়েছে একটি বৃদ্ধাশ্রমকে ঘিরে। এখানে এসে মেলে একে অপরের মতোই একাকিত্বে ভরা কিছু মানুষ। একসময়ের পারিবারিক ভাঙনের রেশ টেনে এনে তারা জড়িয়ে পড়ে এক নতুন জুটির আবেগঘন টানাপড়েনে। কেউ হারিয়েছেন সন্তান, কেউ হারিয়েছেন সঙ্গী, কেউ বা নিজেকেই। এই হারানোর ভেতরেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় একটি বন্ধন- যার রঙ রক্তের নয়, অনুভবের।
ছবির অন্যতম আকর্ষণ তার তারকাবহুল কাস্ট। আছেন সাহেব চট্টোপাধ্যায়, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রিয়াঙ্কা সরকার, মানসী সিনহা, দেবরাজ ভট্টাচার্য, শ্রেয়া ভট্টাচার্য ও শঙ্কর দেবনাথ। প্রতিটি চরিত্র যেন বহন করছে সমাজের একেকটি বাস্তব প্রতিফলন। এইসব পরিচিত মুখের অভিনয়ের ছোঁয়ায় গল্পের আবেগ আরও গভীরতর হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন অনেকে।
এপার বাংলা ও ওপার বাংলার মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা এই ছবি বাংলা চলচ্চিত্রের বৃত্ত থেকে খানিকটা আলাদা। সম্পর্কের জটিলতা, পুরনো ক্ষত এবং নতুন উপলব্ধির দোলাচলে এগিয়ে চলে কাহিনি। এক অদেখা সূত্রে যুক্ত হয় একাধিক মানুষ, যার পরিণতি এক পরিপূর্ণ আবেগময় মুহূর্তে।
‘নৈবেদ্য’ প্রথমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনের পরিকল্পনা করছে নির্মাতারা। এরপর হবে বড় পর্দায় মুক্তি। পরিচালকের মুখে এখনো যদিও তেমন কিছু প্রকাশ পাওয়া যায়নি, তবে টলিপাড়ায় ছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে উচ্চ প্রত্যাশার বাতাবরণ। কারণ, এ ধরনের গল্প বাংলা সিনেমায় আজও বিরল।
যখন বাংলা সিনেমায় ভিজ্যুয়াল চমক আর আধুনিকতাই হয়ে উঠছে মূল আকর্ষণ, তখন ‘নৈবেদ্য’ এক সংবেদনশীল গল্প বলার সাহসী প্রচেষ্টা। এই ছবি মনে করিয়ে দেবে- ভালোবাসা সবসময় রক্তের সম্পর্কের গাঢ়তায় নয়, কখনও কখনও নিঃসঙ্গতাকে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই থাকে মানুষের প্রকৃত আশ্রয়।
কেএন/টিকে