গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) প্রকাশিত উদ্বেগের প্রেক্ষিতে জবাব দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ জবাব দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিটি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও প্রকাশ করেছেন।
প্রেস উইং তাদের বিবৃতিতে নোয়াবের উদ্বেগকে ‘জোর দিয়ে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান’ করেছে। তারা জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে কোনো গণমাধ্যমের সম্পাদকীয়, প্রশাসনিক বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেনি। বরং অনেক ক্ষেত্রেই সরকার সংযম প্রদর্শন করেছে, এমনকি সরকারবিরোধী প্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্যের পরও কোনো চ্যানেলের সম্প্রচার বাতিল করা হয়নি। তারা দাবি করে, পূর্বের সরকারের দ্বারা বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়েকটি গণমাধ্যম পুনরায় চালুর সুযোগও দেয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ও অ্যাক্রেডিটেশন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংবাদিকদের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ও তার বিশেষ সহকারীদের কাছে অবাধ ও সরাসরি প্রবেশাধিকার ছিল। কোনো সাংবাদিককে তার ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মতাদর্শের কারণে ব্রিফিং বা সাক্ষাৎকার থেকে বাদ দেয়া হয়নি।
নোয়াবের সমালোচনার জবাবে প্রেস উইং জানায়, অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ার সংস্কার করা হয়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত পুরোনো ব্যবস্থার পরিবর্তে। আগে অনেক অযোগ্য ব্যক্তি অ্যাক্সেস পাস পেতেন, যারা সাংবাদিক না হয়েও রাজনৈতিক বা কর্পোরেট প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতেন। বর্তমানে শুধুমাত্র প্রকৃত ও যোগ্য সাংবাদিকরাই অস্থায়ী পাসের মাধ্যমে সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন।
চাকরিচ্যুতি ও নিরাপত্তা
সরকারের দাবি, সম্প্রতি কিছু সাংবাদিক চাকরি হারালেও তা সরকারি হস্তক্ষেপের ফলে নয়, বরং গণমাধ্যম মালিকদের সম্পাদনা সংক্রান্ত ও কর্পোরেট কৌশলের অংশ হিসেবেই হয়েছে। প্রেস উইং একে সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখছে।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সরকার জানায়, এ দায়িত্ব কেবল সরকারের নয় বরং এটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যৌথ দায়িত্ব। চলতি বছরের শুরুতে প্রস্তাবিত ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ বাস্তবায়নের চিন্তাভাবনাও চলছে, যা সেলফ সেন্সরশিপ কমাতে সহায়তা করতে পারে।
আত্মসমালোচনার আহ্বান
প্রেস উইং মনে করে, নোয়াবের উচিত নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর দিকেও নজর দেয়া- বিশেষ করে মজুরি শোষণ, শ্রম অধিকার অস্বীকার ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশের মতো গুরুতর ইস্যুগুলোতে। তারা উল্লেখ করে, ঘটনাবলির ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে অভিযোগ তোলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে উপকার করে না, বরং প্রকৃত সমস্যাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।
টিকে/