সৎ বাবা-মা নিয়ে আয়াশের ধারণা নেই, মন্তব্যে অপূর্বর সাবেক স্ত্রী

প্রায় সাত মাস পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। ঢাকায় পা রেখেই একমাত্র সন্তান আয়াশকে দেখতে ছুটে যান তিনি। বাবা-ছেলের আবেগঘন মুহূর্তের সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

যেখানে দেখা যায়, গভীর ঘুমে থাকা আয়াশকে চমকে দিতে কাছে যান বাবা অপূর্ব। আয়াশের ঘুম ভাঙতেই বাবাকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে ধরে আয়াশ; কান্না করে দেয়।

তবে বাবা-ছেলের সুন্দর সেই মুহূর্ত নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক ও ভিত্তিহীন কিছু বিষয় তুলে আনেন একদল নেটিজেন। যারা দাবি করেন, অপূর্ব ও তার স্ত্রীর বিচ্ছেদের পর বাবা-মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ছোট্ট আয়াশ। যে কারণে বাবাকে অনেকদিন পর কাছে পেয়ে কান্না করে দেন তিনি।

নেটিজেনদের এমন মনগড়া মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অপূর্ব ও তার সাবেক স্ত্রী নাজিয়া হাসান অদিতি।

ছেলেকে নিয়ে ‘নেতিবাচক মন্তব্যে’ ক্ষুব্ধ অপূর্বর সাবেক স্ত্রী



প্রথমে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অদিতি লেখেন, ‘আপনাদের মধ্যে অনেকেই দেখেছেন আমার ছেলের বাবা অনেকদিন পর দেশে ফিরে ওকে সারপ্রাইজ দিয়েছে। তাদের এই আবেগঘন মুহূর্তটা ছিল খুবই সুন্দর। তবে কিছু মানুষ এই ভিডিওর নিচে আমার ছেলেকে ‘একা’ বা ‘একাকী’ বলে যে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, তাতে আমি খুবই মর্মাহত। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমার ছেলে আমার কাছেই থাকে।’

ছেলের সুখকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ও সবসময় ভালোবাসা আর যত্নের মধ্যে আছে এবং ওর সব চাহিদা পূরণ করা হয়। ও যখন ইচ্ছে করে বা সপ্তাহের শেষে ওর বাবার কাছে যায়। আমরা সবসময় ওর সুখকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। দয়া করে আমাদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হোন। সম্পূর্ণ ঘটনা না জেনে মন্তব্য করলে তা খুব আঘাত দেয়। যারা আমাদের প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্থন জানিয়েছেন, তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’

একই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অপূর্ব এক স্ট্যাটাসে বলেন, যাদের মস্তিষ্ক, হৃদয়ে নেগেটিভিটির ক‍্যান্সার তাদেরকে, মা-বাবা তাদের সন্তানকে কতটা ভালোবাসে সেটা প্রমাণ করার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এই অভাগারা জানে না প্রতিটা বাবা-মায়ের কাছেই তাদের সন্তান জীবনের সবচেয়ে বড় অংশ। তার প্রতিটি হাসি, প্রতিটি কান্না, প্রতিটি অর্জন-সবকিছু তারা নিজের হৃদয়ে অনুভব করে। সন্তানের হাসি-কান্না তার প্রতিটা অনুভূতি পিতা-মাতার প্রতিটি দিনকে করে তোলে উজ্জ্বল ও অর্থবহ। তারা জানে না আপনি আপনার সন্তানকে যতটা ভালোবাসেন অন্য একজন পিতা-মাতাও তার সন্তানকে ঠিক ততটাই ভালোবাসেন। নিজেকে উত্তম আর অন্যকে অধম ভাবার মতো অসুস্থতা থেকে আপনারা দ্রুত সেরে উঠুন, সেই প্রত্যাশা করি। আমার বা অন্য কারো সন্তান নিয়ে মনগড়া কোনো ভুল মন্তব্য করার আগে ভেবে নিন। আপনি যদি সত্য না জানেন, তবে নীরব থাকুন। কারণ কারো সন্তানের জীবন আপনার কনটেন্ট তৈরির ‘আইটেম’ নয়।

জানিয়ে রাখা ভালো, বিচ্ছেদের পর অপূর্ব-অদিতি দুজনেই নতুন করে সংসার জীবন শুরু করেছেন। তাদের দুজনের জীবনেই এসেছে নতুন মানুষ। ফলে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আয়াশকে জড়িয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

এ নিয়ে এক ফেসবুক লাইভে নাজিয়া হাসান অদিতি বলেন, ‘আয়াশের জীবনে অপ্রাপ্তি আছে অবশ্যই। কারণ বাবা-মা একসঙ্গে না থাকাটা একটা অপ্রাপ্তি। এটা আমাদের জন্যও যন্ত্রণাদায়ক।



ডিভোর্সের পরে আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি ওকে ভালো রাখার। দুই পরিবারই ওকে কখনো নেগেটিভিটির মাঝে রাখতে চাই না। কিন্তু একটা ভিডিও ক্লিপের কারণে ওকে হঠাৎ করেই এসবের মাঝে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, আয়াশ এসব জানেও না বুঝেও না। সে খুব হ্যাপি কিড।’

অদিতি আরও বলেন, ‘আয়াশ আমার সাথেই থাকে। জন্মের পর থেকেই আমার সঙ্গে ছায়ার মতো থাকে।

ওর বাবাও তাকে অনেক ভালোবাসে। আমরা চেষ্টা করি এক ছাদের নিচে না থাকলেও আয়াশকে সব ধরণের নেগেটিভিটি থেকে দূরে রাখার।’

সবশেষ অপূর্বের সাবেক স্ত্রী বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আয়াশ তার বাবার কাছ থেকে বা আমার কাছ থেকে কখনো কোনো অসম্মান দেখেনি। এ কারণে সে দুজনকেই খুব ভালোবাসে। হয়তো মানুষের কাছে আমরা অপরাধী। কারণ আপনারা হয়তো এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করেননি। তবে আয়াশ এখনও পর্যন্ত সৎ বাবা-সৎ মা এসব সম্পর্কে বুঝে না।

হয়তো বুঝবে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করি, সে যেন একজন ভালো মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠে। আপনারা সবসময় ওর জন্য দোয়া করবেন, যেন সে ভালো থাকে আমাদের মাঝে।’

এমকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে : মোহাম্মদ শাহজাহান Aug 09, 2025
img
আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন Aug 09, 2025
img
নিউ মার্কেটে বিভিন্ন অস্ত্রের গুদামের সন্ধান Aug 09, 2025
img
দুর্নীতি রোধে আইসিসির সাবেক কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিল বিসিবি Aug 09, 2025
img
মালদ্বীপে বাংলাদেশের কনিষ্ঠতম রাষ্ট্রদূত হলেন নাজমুল ইসলাম Aug 09, 2025
img
দুর্নীতির অভিযোগ ৮ উপদেষ্টার বিরুদ্ধে, তালিকায় কারা আছেন: মাসুদ কামাল Aug 09, 2025
img
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ইতিহাস হয়ে থাকবে : ইউজিসি চেয়ারম্যান Aug 09, 2025
img
গাজীপুরে লাইনচ্যুত পদ্মা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ Aug 09, 2025
img
রোনালদো কখনও সমস্যা ছিল না : টেন হ্যাগ Aug 09, 2025
img
৯৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন মহাকাশ বিস্ফোরণে বেঁচে ফেরা লাভেল Aug 09, 2025
img
বিসিবির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তিতে টনি হেমিং, জানা গেল গামিনির ভবিষ্যৎ Aug 09, 2025
img
ঋতুপর্ণার বাড়ি নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছে বিসিবি Aug 09, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৩, আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ৩২৫ Aug 09, 2025
img
গাজা দখল ঠেকাতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যের ডাক তুরস্কের Aug 09, 2025
img
ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বিএনপি ও ইসলামি দল, রাজনীতিতে নতুন পালাবদল Aug 09, 2025
img
যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের প্রমাণ দিন, চ্যালেঞ্জ পাকিস্তানের Aug 09, 2025
img
তুষারের গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি নীলা ইস্রাফিলের Aug 09, 2025
img
দেড় মাস পর বড়পুকুরিয়া থেকে আবারও কয়লা উত্তোলন শুরু Aug 09, 2025
img
চার বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস Aug 09, 2025
img
নিবন্ধন শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকার, প্রথম ধাপেই পাবে ৫ কোটি Aug 09, 2025