এ যেন বছরের সবচেয়ে চমকপ্রদ মহাজাগতিক প্রদর্শনীর সময়। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০০টি উল্কা দেখা যেতে পারে ১২ ও ১৩ আগস্ট, যা আলোকিত করবে রাতের আকাশকে। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের আকাশ থেকেও দেখা যাবে ‘পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি’ নামের এই মহাজাগতিক ঘটনা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, প্রতিবছর একই সময়ে হয়ে থাকে এই পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি। এ বছর ১৩ আগস্ট ভোররাতে উল্কাবৃষ্টি সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উত্তর গোলার্ধের যেকোনো স্থান থেকে পার্সিয়েড উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে বলে জানানো হয়েছে। গত বছর এই সময় উল্কাবৃষ্টি ঘটার সময় দৃশ্যমান চাঁদ ছিল না। তবে এ বছর উল্কাবৃষ্টির সময় চাঁদের আলো থাকবে। এর ফলে উল্কাবৃষ্টি দেখার সময় কিছুটা বাধার সম্মুখীন হতে হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পার্সিয়াস নক্ষত্রমণ্ডলের পার্সি নক্ষত্র থেকে আসবে উল্কাগুলো। চাঁদের আলো থাকা সত্ত্বেও পার্সাইড উল্কা পুরো আকাশে দারুণ এক দৃশ্য তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: ১২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ, অন্ধকারে থাকবে পৃথিবীর একাংশ!
পার্সাইড নামটি পার্সিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে এসেছে। প্রতিবছর আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এই উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০০টি উল্কা দেখা যাবে। এসব উল্কা ধূমকেতুর ধ্বংসাবশেষ দিয়ে তৈরি বৃহত্তর কণা থেকে তৈরি হয়েছে।
পার্সাইড উল্কাবৃষ্টির উৎস সুইফট-টাটল ধূমকেতু। এই ধূমকেতু যখন সূর্যের কাছাকাছি আসে, তখন এর পৃষ্ঠ থেকে বরফ ও ধূলিকণা মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবী যখন তার কক্ষপথে এই ধূলিকণার স্তরের মধ্য দিয়ে যায়, তখন এই সব কণা বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং বাতাসের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে জ্বলে ওঠে। এই জ্বলন্ত কণাই হচ্ছে উল্কা বা শুটিং স্টার।
কখন এবং কীভাবে দেখা যাবে
স্পেস ডট কম জানিয়েছে, ১৩ আগস্ট ভোরবেলা পার্সাইড দেখার সবচেয়ে ভোলো সময়, যখন নিখুঁত পরিস্থিতিতে প্রতি ঘণ্টায় ১০০টি পর্যন্ত শুটিং স্টার দৃশ্যমান হতে পারে।
স্পেস ডট কম-কে দেয়া এক ইমেইলে মার্কিন মেটিওর সোসাইটির উল্কা বিশেষজ্ঞ রবার্ট লুনসফোর্ড বলেছেন, ‘সর্বোত্তম হার সম্ভবত প্রতি ঘণ্টায় ১৫টির কাছাকাছি হবে, কারণ ম্লান উল্কাগুলো বেশিরভাগ কার্যকলাপ তৈরি করে।’
নাসার মতে, স্থানীয় সময় রাত ১০টার মধ্যেও উল্কা দেখা দিতে পারে।
রয়্যাল অবজারভেটরি গ্রিনউইচের সায়েন্স কমিউনিকেটর ফিন বুরিজ, উল্কাবৃষ্টি দেখার সম্ভাবনা আরও বাড়ানোর জন্য কিছু টিপস শেয়ার করেছেন।
ভালোভাবে দেখার জন্য ভবন, পাহাড়ের মতো আকাশের নিচের বিস্তৃত জায়গা বেছে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। উল্কাপিণ্ড যেকোনো জায়গায় দেখা দিতে পারে, তাই পিঠের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে উপরের দিকে তাকানোরও পরামর্শ তার।
এফপি/এসএন