বিপ্লবের প্রতীক ফিদেল কাস্ত্রোর ৯৯তম জন্মদিন আজ। ১৯২৬ সালের ১৩ আগস্ট কিউবার পূর্বাঞ্চল বিরানে জন্মগ্রহণ করেন এই সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল বিরোধিতার মধ্যেও প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে কিউবাকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়াকালীন ফিদেলের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। মার্কিন আধিপত্য ও স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৩ সালে সান্তিয়াগোর মনকাডা ব্যারাকে সশস্ত্র হামলা চালালে গ্রেপ্তার হয়ে কারাদণ্ড পান। কারাগারে দেওয়া বিখ্যাত ‘ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে’ ভাষণ তাকে কিউবার জনগণের কাছে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
কারামুক্তির পর মেক্সিকো থেকে ফিরে আর্জেন্টাইন বিপ্লবী চে গুয়েভারার সঙ্গে পরিচয় হয় এবং সিয়েরা মায়েস্ত্রায় গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। দুই বছর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৯৫৯ সালে বাতিস্তার স্বৈরশাসন পতিত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে দেশকে ব্যাপক ভূমি সংস্কার, শিল্প জাতীয়করণ ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনে একদলীয় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ঘোষণা করেন।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় কিউবা সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে রয়ে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুবার ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার মুখে পড়লেও ফিদেল তাঁর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। ১৯৬১ সালের ‘বে অফ পিগস’ হামলাসহ নানা চাপের মধ্যেও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার দৃঢ় সমর্থন ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বঙ্গবন্ধুকে ‘হিমালয়ের সমান’ ব্যক্তি হিসেবে সম্মানিত করেন। বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করে।
২০০৮ সালে স্বাস্থ্যগত কারণে ক্ষমতা ভাই রাউল কাস্ত্রোর কাছে হস্তান্তর করেন। ২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ফিদেল কাস্ত্রো। আজও বিশ্বজুড়ে তার জন্মদিন স্মরণীয় এবং সমাজতন্ত্রের সমর্থকদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস।
এফপি/ টিএ