‘তাণ্ডব’-এর সাফল্যের পর আবারও নতুন ছবির ঘোষণা দিলেন ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। জানালেন, ডিসেম্বরে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত ‘সোলজার’ আর আগামী ঈদে আসবে ‘প্রিন্স’। শুধু সিনেমা নয়, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করা সাম্প্রতিক এক পোস্ট ঘিরে আলোচনার জবাবও দিয়েছেন তিনি।
এই অভিনেতা তার পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন। সামনে কী সিনেমা আসছে সে বিষয়ে শাকিব বলেন, ‘‘ধুমধাড়াক্কা সিনেমা তো অনেক হয়েছে। এবার একটু অন্য ধরনের স্টোরি বেইজড সিনেমা আনতে চাই। সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এবং কাজ আগাচ্ছে। নেক্সট আসছে সাকিব ফাহাদের পরিচালনায় ‘সোলজার’, যেটা এই ডিসেম্বরে রিলিজের প্ল্যান আছে। পরবর্তীতে আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ‘প্রিন্স’ রিলিজ হবে ঈদুল ফিতরে। আরও কয়েকটা সিনেমার স্টোরির কাজ চলছে।’’
এই দুই ছবির মধ্যে ‘সোলজার’ নিয়ে এক মাস ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। খবর ছড়িয়েছিল, সাকিব ফাহাদ পরিচালিত সিনেমাটিতে সেনা কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করবেন শাকিব। আরও গুঞ্জন ছড়ায়, এই সিনেমায় শাকিবের বিপরীতে থাকবেন তানজিন তিশা। তবে এসব নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি সিনেমা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অবশেষে শাকিব খানের বক্তব্যে পরিষ্কার হলো সিনেমার নাম ও মুক্তির সময়।
জানা গেছে, ‘সোলজার’ সিনেমায় রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এক এজেন্টের চরিত্রে দেখে দেবেন শাকিব। দায়িত্ব পালনকালে সেই এজেন্টের মানসিক টানাপোড়েন, ব্যক্তিগত জীবনের নানা দ্বন্দ্ব আর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফুটে উঠবে সিনেমার গল্পে। আগামী মাসে শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। শিগগির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে জানানো হবে সিনেমার অন্য অভিনয়শিল্পীদের নাম।
এই অভিনেতা সিনেমার পাইরেসি নিয়েও কথা বলেন, ‘সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, তাদের এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি প্রয়োজন। কঠোর হওয়া প্রয়োজন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। পাইরেসি যারাই করছে, বিষয়টি ইনটেনশনালি এবং পরিকল্পিতভাবে করছে মনে হয়!’
এদিকে শাকিব খান বর্তমানে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শবনম বুবলী ও ছেলে শেহজাদ খান বীরও রয়েছে তার সঙ্গে। ছেলেকে নিয়ে যে দারুণ সময় কাটছে শাকিব খানের, সেটি বোঝা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে। সবকিছু নিয়ে বরাবরের মতোই আলোচনায় রয়েছেন শাকিব। তবে ১৫ আগস্ট এই অভিনেতা আলোচনায় আসেন ভিন্ন কারণে। শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি পোস্টকে ঘিরে তিনি যেমন আলোচিত হয়েছেন, তেমনি হয়েছেন সমালোচিতও।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখুন এখন আমাদের দেশে তো সব সেক্টরে সংস্কার চলছে। বিশ্বাস ছিল আমাদের চিন্তাভাবনাতেও এই সংস্কার প্রতিফলিত হবে। এমন প্রেক্ষাপটে দলমত নির্বিশেষে, জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদদের যেমন স্মরণ করা উচিত, তেমনি দেশের জন্য অতীতে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, জাতির সেসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরও সম্মান জানানো উচিত। তাদের স্মরণে শ্রদ্ধা প্রদর্শন কোনো রাজনৈতিক দলের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ থাকা উচিত নয়। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বেই থাকুক।’
এরপর এ বিষয়ে শাকিব বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে অনেক সময় আমাদের জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম, সম্মান এবং ত্যাগ শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এটা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। যারা আমাদের দেশ ও মানুষের জন্য জীবনের সর্বস্ব দিয়েছেন, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। দেখুন, আমি শাকিব খান, কখনও কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনও রাজনৈতিক পদ বা দায়িত্বও আমার নেই। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার অফার করা হয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র সিনেমার কথা ভেবে আমি সচেতনভাবে এড়িয়ে গিয়েছি। এমনকি কোনও ধরনের পলিটিক্যাল সুযোগ-সুবিধা নেইনি। বরং অনেক সময় আমাকেই কর্ম থেকে ব্যক্তিজীবনে পলিটিক্যাল লোক দ্বারা অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে, সেটা তো সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে কারো অজানা থাকার কথা নয়।’
উল্লেখ্য, গত ঈদুল আজহায় শাকিব খান ও সাবিলা নূর অভিনীত সিনেমা ‘তাণ্ডব’ দারুণ ব্যবসা করে। এই সিনেমার মাধ্যমে সাবিলার বড় পর্দায় অভিষেক হয়।
ইএ/এসএন