কলকাতাকে বাদ দিয়ে ভারতের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে কলকাতা মেট্রোরেলের নতুন যুগের সূচনা করলেন তিনি। কলকাতা বিমানবন্দর, হাওড়া ও শিয়ালদহ রেলস্টেশন এবং সল্টলেক আজ একসঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই পরিষেবার আওতায়।
আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে সবুজ পতাকা নেড়ে তিনটি মেট্রো রুটের আনুষ্ঠানিক শুভ সূচনা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি নোয়াপাড়া-জয় হিন্দ (কলকাতা বিমানবন্দর), শিয়ালদহ- এসপ্লানেড এবং বেলেঘাটা-হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (ইএমবাই পাস)। একই সঙ্গে ৫ হাজার ২০০ কোটি রুপির সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনের পর মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে উন্নয়নের গতি দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। কলকাতা হলো ভারতের ইতিহাস ও সমৃদ্ধির পরিচয়ক। কলকাতাকে বাদ দিয়ে ভারতের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর যখন সারা বিশ্বে তৃতীয় শক্তির দেশ হিসেবে এগোচ্ছে ভারত, তখন কলকাতা শহরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ সারা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম মেট্রো নেটওয়ার্ক স্থাপিত হলো ভারতে। মেট্রো সম্প্রসারণের ফলে মানুষের যাতায়াত এবং যোগাযোগের সুবিধা হলো। কমলো পরিবহনের খরচ। ২০১৪ সালের আগের দেশে ২৫০ কিলোমিটার মেট্রো পথ ছিল। বর্তমানে দেশে মেট্রো রুটের দৈর্ঘ্য হাজার কিলোমিটার বেশি।
কলকাতায় মেট্রোরেল সম্প্রসারণের ফলে বিমানবন্দর থেকে এখন সরাসরি কলকাতার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা যাবে। একইভাবে বিমানবন্দর থেকে মেট্রোযোগে পৌঁছানো যাবে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনে। পাশাপাশি যুক্ত হলো সল্টলেক এবং বিধাননগর। এর ফলে বিমানবন্দর থেকে ভারতে আসা পর্যটক ও যাত্রীরা খুব সহজেই নিউমার্কেট, ধর্মতলা, পার্কস্ট্রিটসহ কলকাতা শহরের অন্য প্রান্তে চলে যেতে পারবেন। পৌঁছে যেতে পারবেন কলকাতার হাসপাতালগুলোতে। আবার বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হাওড়া বা শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছাতে পারবেন।
মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে ভাড়ার নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ভাড়া রাখা হয়েছে মাত্র ৫ রুপি এবং সর্বোচ্চ ভাড়া রাখা হয়েছে ৭০ রুপি।
বিমানবন্দর থেকে যশোর রোড যেতে সর্বনিম্ন ভাড়া রাখা হয়েছে মাত্র ৫ রুপি। অন্যদিকে বিমানবন্দর থেকে এসপ্ল্যানেড বা পার্কস্ট্রিট স্টেশন পর্যন্ত টিকিটের দাম ৪০ রুপি। আবার বিমানবন্দর থেকে কবি সুভাষ রুটে ৪৫ রুপি। মূলত এই অঞ্চলের মধ্যেই পড়ে কলকাতা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলো।
এছাড়া বিমানবন্দর থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ বা করুণাময়ী যাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীদের দিতে হবে ৭০ রুপি ভাড়া। মোদি ছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী রবনীত সিং বিট্টু, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ড. সিভি আনন্দ বোস, কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌ পরিবহন ও জলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।
যদিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ থাকলেও উপস্থিত ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সংসদ সদস্য সৌগত রায়।
কেএন/টিএ