যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় রিমান্ড শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হাসানের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
ওই আবেদনে বলা হয়, মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. নাসির উদ্দিন সাথী মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে মহান সাংবাদিকতার পেশায় গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ও দায়িত্বে থেকে অনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে দলীয় এবং ব্যক্তিগত হীনস্বার্থে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দলমতকে প্রত্যাখ্যান করে উদ্দেশ্যমূলক হিংসাত্মক কার্যক্রম সংঘঠিত করে মামলার ডিসিস্ট মো. আসাদুল হক বাবু হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনের বিপক্ষে উসকানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে আন্দোলনবিরোধী অবস্থান নেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে জেলহাজতে আবদ্ধ করে রাখা বিশেষ প্রয়োজন।
জামিনে মুক্তি পেলে পলাতক হওয়ার সম্ভবনাসহ মামলার তদন্তকাজে বিঘ্নতার সৃষ্টি হতে পারে।
এ সময় আসামি নাসিরের আইনজীবী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম জামিন চেয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। মামলার বাদী এফিডেভিট দিয়ে বলেছেন, ভুল তথ্যে তাকে আসামি করা হয়েছে।
জামিন, অব্যাহতি বা খালাস পেলে তার কোনো আপত্তি নেই। আন্দোলনের সময় প্রতিটি মিডিয়া উপস্থিত ছিল। প্রত্যেক মিডিয়ায় ঘটনা সম্প্রচারিত করেছে। বাদীরও জামিন পেলে আপত্তি নেই। জামিন পেলে তিনি দেশের বাইরে যাবেন, পলাতক হবেন না।
তা ছাড়া তিনি অসুস্থ, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগও নেই।'
রাষ্ট্রপক্ষে কাইয়ুম হোসেন নয়ন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এটি একটি হত্যা মামলা। আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত রবিবার গুলশান থেকে নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন সোমবার তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন আসাদুল। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
এমকে/টিকে