পেলে-নেইমারের ক্লাব সান্তোসে তার ক্যারিয়ারের শুরু। প্রতিভাবান এই স্ট্রাইকারকে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই দলে ভেড়ায় সিরি আ'র জায়ান্ট জুভেন্টাস। কাইও জর্জের শুরুটা স্বপ্নের মতোই ছিল। কিন্তু ইউরোপে গিয়ে নিজেকে মেলে ধরতে পারলেন কই! ২ বছরে তুরিনের ওল্ড লেডিদের হয়ে ১১ ম্যাচ খেলেও গোলের খাতা খুলতে পারেননি। ধারে আরেক ইতালিয়ান ক্লাব ফ্রোসিননে খেলতে গেলেও আলো ছড়াতে ব্যর্থ হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলে ফিরে গিয়েই নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন জর্জ। আর তাতে খুলে গেছে জাতীয় দলের দরজাও।
গত সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের শেষ দুই রাউন্ডের জন্য দল ঘোষণা করেছেন ব্রাজিলের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। সেই দলেই আছে কাইও জর্জের নাম। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ক্রুজেইরোর এই স্ট্রাইকার এবারই প্রথম ডাক পেলেন জাতীয় দলে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে চিলি ও ১০ সেপ্টেম্বর অ্যাওয়ে ম্যাচে বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলবে ব্রাজিল।
ভিনিসিউস জুনিয়র, রদ্রিগো, নেইমারদের অবর্তমানে গোল করার ভার থাকছে জর্জের মতো তরুণদের কাঁধেই।
২৩ বছর বয়সী জর্জ জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে। ব্রাজিলিয়ান সিরি আ'য় এই মৌসুমে ক্রুজেইরোর হয়ে ২০ ম্যাচে ১৫ গোল আর ৫ অ্যাসিস্ট করেছেন জর্জ। এই মুহূর্তে তিনিই ব্রাজিলের লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে এই স্ট্রাইকার ২৯ ম্যাচে ১৭ গোল আর ৫ অ্যাসিস্ট করেছেন।
দীর্ঘদিন থেকেই গোলের সামনে ক্ষুরধার স্ট্রাইকারের সংকটে ভুগছে ব্রাজিল। রোনালদো নাজারিওর উত্তরসূরি হিসেবে অনেককেই ভাবা হলেও কেউই তার শূন্যতা পূরণ করতে পারেননি।
চলতি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ব্রাজিলের স্ট্রাইকার সংকট আরও প্রকট। বাছাই পর্বে ব্রাজিলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫টি গোল করেছেন রাফিনিয়া। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ গোল করেছেন রদ্রিগো।
আগামী বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে সুযোগ কাজে লাগাবে এমন একজন স্ট্রাইকারের অভাব পূরণ করতে কাইও জর্জ হতে পারেন কোচ আনচেলত্তির তুরুপের তাস। তাই তো বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বাছাই পর্বের শেষ দুই ম্যাচে পরীক্ষানিরীক্ষার পথে হাঁটছেন তিনি। চেলসির হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জোয়াও পেদ্রো বা রিচার্লিসনকে টপকে চিলি বা বলিভিয়ার বিপক্ষে একাদশে জায়গা পাওয়া তার জন্য কঠিন হলেও বদলি হিসেবে সুযোগ মিলতেও পারে। আর সীমিত সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে খুলে যেতে পারে বিশ্বকাপের রাস্তাও।
তবে আপাতত ক্রুজেইরোর হয়ে যা করছেন তাতে শিগগিরই ফের ইউরোপের ক্লাবের রাস্তার দেখা পেয়ে যেতে পারেন জর্জ। বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের দাবি, বায়ার্ন মিউনিখ হ্যারি কেনের ব্যাকআপ হিসেবে এই ব্রাজিলিয়ানকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী। তবে সেটা খুব একটা সহজ হবে না তাদের জন্য, আপাতত ক্রুজেইরোর তাকে ছাড়ার কোনো ইচ্ছা নেই। এক সময় জুভেন্টাসের বোঝায় পরিণত হওয়া কাইও জর্জ পাচ্ছেন সুসময়ের ঘ্রাণ।
এফপি/ এস এন