বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি জনগণের দল। আমাদের নেতা তারেক রহমান আন্দোলন করছেন জনগণের ক্ষমতা, জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আগামী দিনে গণতান্ত্রিক পরিবেশে একটি স্বচ্ছ ভোট হবে। আর সেই ভোটে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তারা কাকে দেবে তা বেছে নেবে জনগণ।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল প্রাঙ্গণে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালিপূর্ব এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আজকাল আমরা অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য শুনি। তারা বলেন- এটা হতে দেবো না, ওটা হতে দেবো না। তাদের যদি ৫৪ বছরের ইতিহাস দেখেন, দেখবেন তারা কেউ কখনো নিষিদ্ধ ছিলেন, কেউ সংসদে ১০টা ২০টা বা ১৮টা সিট পেয়েছেন। কিন্তু জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য তাদের ওপর আস্থা রাখেনি। তাই জনগণের আস্থা পাওয়ার জন্য কর্মসূচি দিয়ে জনগণের কাছে যান। বিএনপি যেমন ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে, তেমনি আপনারা কর্মসূচি নিয়ে জনগণের পাশে যান। জনগণকে চোখ রাঙানি দেখাবেন না, ভয় দেখাবেন না।
বিগত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পলায়েনে বাধ্য হয়েছে স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, এখনো কিছু কিছু দল কর্তৃত্ববাদীর ভয় দেখায়, নিজেদের নিরঙ্কুশ ভাবে। কিন্তু মনে রাখবেন- নিরঙ্কুশ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। আর এই দেশের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা জনগণের হাতে। কাজেই কোনো অবস্থাতেই জনগণের বিপক্ষে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
ডা. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের পূর্বেই নির্বাচনের যে ঘোষণা এসেছে, সেই নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা, যত ষড়যন্ত্রই দেশ-বিদেশ থেকে হোক না কেন- বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে আগামী দিনে জনগণের প্রতীক নির্বাচিত করে জনাব তারেক রহমানকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে, ইনশাআল্লাহ। তার নেতৃত্বেই ৩১ দফার আলোকে আগামীর বাংলাদেশ হবে সবার বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, একদলীয় বাকশাল থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আজকে যে বাংলাদেশ আমরা দেখছি, এই বাংলাদেশে আসার জন্য তার কালজয়ী দর্শন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। অর্থাৎ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা এই ভূখণ্ডে যারা আছি, আমরা সবাই বাংলাদেশি। সেজন্য আজকের এই দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। সেই সঙ্গে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিকে জনগণের দলে পরিণত করেছেন, তাকেও আজকের এই দিনে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমাদের এই নেত্রীকে সুস্থ রাখেন ও ভবিষ্যতে তিনি আমাদের আবারও নেতৃত্ব দিতে পারেন। ওনার অবর্তমানে আমাদের নেতা তারেক রহমান শুধু বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করেননি, তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে দেশের সব মানুষকে, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তাকেও আমরা আজকের এই দিনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তার নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল আলম বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। এ সময় উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী রানা, এ কে এম মাহাবুবুল আলম, লিটন আকন্দ, শামীম আজাদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি টাউন হল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে দুর্গাবাড়ী ও নতুন বাজার সড়ক হয়ে নগরীর হরিকিশোর রায় রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
কেএন/টিকে