আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম বলেন, রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন তার অপরাধ থেকে ক্ষমা পাবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাইব্যুনাল।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়া রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জেরা করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে তার জেরা শুরু হয়।
চৌধুরী মামুনকে জেরা করছেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
একপর্যায়ে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন প্রসিকিউশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দোষ স্বীকার করলেই অপরাধ থেকে রেহাই পাওয়া যায় না।
পরে এ আইনজীবী সাংবাদিকদের আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তারা কোনো অপরাধ করেছেন বা তারা কোনো হত্যার সাথে জড়িত এ কথা তো আমি বলিনি। আমার কথা হলো উনি (মামুন) দোষ স্বীকার করেছেন যে, তিনি হত্যার সাথে জড়িত। তিনি সব অপরাধের সাথে জড়িত সেটা স্বীকার করেছেন। যেহেতু তিনি স্বীকার করেছেন, সেহেতু তিনি অপরাধ থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারেন না। আমার বক্তব্য হলো, আমার আসামিদ্বয় তারা কোনো অপরাধ করেননি, তারো কোনো হত্যার সাথে জড়িতও ছিলেন না এবং তারা কোনো নির্দেশও দেননি।
পাল্টা জবাব দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম বলেন, মামুন ক্ষমা পাবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাইব্যুনাল।
মিজানুল ইসলাম বলেন, তিনি (মানুম) তার জবানবন্দিতে বলেছেন যে, ওই সময় তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমার কারণে আমার অধীনস্থতা অপরাধ সংগঠিত করেছেন তার দায় আমার। দায় যখন তিনি স্বীকার করেছেন এই প্রশ্নটা অবান্তর। দায় স্বীকার করলে তাকে শাস্তি দেয়া যাবে কিনা, সেই ক্ষেত্রে আগে বলা হয়েছে, এখনো বলছি তাকে শাস্তি দেবেন কি দেবেন না, সেটা ট্রাইব্যুনাল ঠিক করবেন ।
তিনি আরও বলেন, এ মাসের শেষে বা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষে হবে জুলাই-আগস্ট হত্যাযজ্ঞের মামলায় শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ।
স্টেট ডিফেন্সের আবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আসামি পলাতক সেহেতু তাদের সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ নেই। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের মোট সাক্ষী ৮১ জন। সাবেক আইজিপিসহ এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের সাক্ষ্য-জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
কেএন/এসএন