ভারতের রাজনীতি থেকে অপরাধমুক্তির ডাক দিলেও খোদ নরেন্দ্র মোদির দলেই ৪০ শতাংশ মন্ত্রী বিভিন্ন মামলার আসামি। তথ্য বলছে, বিজেপির ৩৩৬ মন্ত্রীর মধ্যে ১৩৬ জনের নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। ৮৮ জনের বিরুদ্ধে আছে খুন, হত্যাচেষ্টা, অপহরণ কিংবা নারী নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ।
সম্প্রতি ভারতের লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবিধান সংশোধনী বিল উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবে বলা হয়, গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে অন্তত ৩০ দিনের জন্য জেলে থাকলে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা অন্যকোনো মন্ত্রীকে পদ হারাতে হবে।
সরকারের দাবি, প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করা এবং জনগণের আস্থা বজায় রাখাই এর মূল লক্ষ্য। তবে স্বাধীন গবেষণা সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস-এডিআর’র তথ্য বলছে, খোদ নরেন্দ্র মোদির দলেই ৪০ শতাংশ মন্ত্রী বিভিন্ন মামলার আসামি।
এডিআর-এর তথ্যে বলা হয়েছে, বিজেপির ৩৩৬ মন্ত্রীর মধ্যে ১৩৬ জনের নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। ৮৮ জনের বিরুদ্ধে আছে খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ কিংবা নারী নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ। এই তালিকায় শুধু তৃণমূল পর্যায়ের নেতা নন, আছে বড় বড় মন্ত্রীর নামও।
রাজ্য পর্যায়েও একই চিত্র। দেশটির অন্তত ১১টি রাজ্যে ৬০ শতাংশের বেশি মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই মামলা ঝুলছে। বিজেপি-এনডিএ শাসিত বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও পুদুচেরি, সব জায়গাতেই অনেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা আছে।
আবার কংগ্রেস শাসিত তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, হিমাচল কিংবা আম আদমি পার্টি শাসিত পাঞ্জাব, ডিএমকের তামিলনাড়ুতেও একই চিত্র। কংগ্রেসের ৬১ মন্ত্রীর মধ্যে ৪৫ জনের নামে রছেয়ে মামলা। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ৪০ মন্ত্রীর মধ্যে ১৩ জনের বিরুদ্ধেও ঝুলছে ফৌজদারি মামলা।
খোদ বিজেপির মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেই যখন মামলার এমন চিত্র, তখন মোদি সরকারের উত্থাপিত বিল কার্যকর হবে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, এই বিল ভোটের মাঠে প্রচারণায় বিজেপির অস্ত্র হিসেবেই বেশি ব্যবহার হবে। বাস্তবে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের সরিয়ে দেয়ার মতো রাজনৈতিক সদিচ্ছা আদৌ বিজেপির আছে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
কেএন/টিকে