নেপালে বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সাংসদ পদত্যাগ করলেও বর্তমান মন্ত্রিসভার অধীনেই দেশ পরিচালিত হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল।
তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে আন্দোলনকারী ‘জেন-জি’ প্রতিনিধিদের আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ও কোথায় রাখা হয়েছে, সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি নেপালি সেনাবাহিনী।
রামচন্দ্র পৌডেল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংবিধানের নিবন্ধ ৭৭-এর ধারা ৩ অনুযায়ী নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রিসভার অধীনেই দেশ পরিচালিত হবে।
প্রেসিডেন্ট পৌডেল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে ‘সংবিধান অনুযায়ী নতুন ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত’ অলিকেই সরকারের কাজ চালানোর দায়িত্ব দেন। যদিও অলির প্রকাশ্যে কোনো উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা চলছে, অলি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তবে তার ঘনিষ্ঠ একজন ব্যক্তি দাবি করেছেন, তিনি নেপালে আছেন ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সুরক্ষায় রয়েছেন। বালুওয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে মঙ্গলবার বিকেলে নেপালি সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার তাকে উদ্ধার করে।
সংবিধান অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতিতে সংসদের কোনো একজন সদস্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন এমন কোনো ব্যক্তি, যিনি সমাজে সাধারণ মানুষ ও জেনারেশন জির কাছে গ্রহণযোগ্য, তাকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘আমাদের শুধু সংবিধানে অনুমোদিত বিধানের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ অন্য রকম একটি পরিস্থিতি, এর সমাধান রীতিবহির্ভূতভাবেও হতে পারে।’
এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে মঙ্গলবার দুপুরে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে সব ধরণের বিমান চলাচল বন্ধ হওয়ার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর চালু হয়েছে ত্রিভূবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। বিমানবন্দরের মুখপাত্র রিনজি শেরপা বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেপালের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দেশটির সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশসহ একাধিক রাজ্যের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুসহ সারা দেশে চলা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা বন্ধে দেশটির সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে।
ইউটি/টিএ