দীর্ঘদিনের আন্দোলন এবং চলমান গণছুটি কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (বাপবিএ)। সরকারের আশ্বাসে আস্থা রেখে এবং বিদ্যমান সংকট সমাধানে আলোচনার পথ খুলে দিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিদ্যুৎ সেবায় বৈষম্য দূর করে একটি টেকসই ও মানসম্মত বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সংস্কার দাবি করে আন্দোলন শুরু করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। আন্দোলনের মুখে সরকার একাধিকবার কমিটি গঠন করলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর অসহযোগিতার কারণে তা বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে বলে দাবি সংগঠনটির।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘ আন্দোলনের জেরে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন, চাকরিচ্যুতি, বরখাস্ত, সংযুক্তি, শাস্তিমূলক বদলি এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭২ জনের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, ২০ জন কর্মকর্তার জেল, ৪০ জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুতি, ৮৭ জনকে বরখাস্ত ও সংযুক্ত এবং ৬ হাজার ৫০০ জনের শাস্তিমূলক বদলির অভিযোগও জানানো হয়েছে।
বাপবিএ জানায়, চলমান গণছুটি কর্মসূচিতে ৮০টি সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ৩৩ হাজারের বেশি সক্রিয় অংশগ্রহণ করলেও, দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উপকেন্দ্রগুলো চালু রাখা হয়েছে।
তবে তারা অভিযোগ করেন, আরইবি বিদ্যুৎ বিভাগকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে এবং মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীদের ‘দেশবিরোধী শক্তি’ ও ‘নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রকারী’ হিসেবে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিদ্যমান সংকট নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবং জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গণছুটি কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করছে। একইসঙ্গে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাপবিএ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে, সরকারের প্রতি তাদের আস্থা ও সদিচ্ছার প্রতিফলন আলোচনার মাধ্যমে একটি টেকসই ও গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে ফিরে আসবে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পুরো বিজ্ঞপ্তিটি
ইএ/টিকে