গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে ৬২ ফিলিস্তিনি নিহত, গৃহহীন ৬ হাজার

গাজা শহরে হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল-আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও গাজার বিভিন্ন অংশে হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহু বাহিনী। এসব হামলায় গাজাজুড়ে একদিনে আরও ৬২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজা সিটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রসিকিউশন ভবনে হামলাসহ ইসরাইলি আগ্রাসনে একদিনেই ছয় হাজারের বেশি বাসিন্দা গৃহহীন হয়েছেন।

সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘গাজা শহরের বাসিন্দারা অব্যাহত অবরোধ ও বোমাবর্ষণের মধ্যে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন।’

গাজার প্রত্যক্ষদর্শীরা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, ইসরাইলি বাহিনী গাজা শহর দখল করার জন্য হামলা জোরদার করেছে। তারা ক্ষুধার্ত এবং ভীত ফিলিস্তিনিদের পালিয়ে যেতে সতর্কতামূলক লিফলেটও ছেড়েছে।

গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার হানি মাহমুদ বলেন, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান থেকে প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে আবাসিক ভবন এবং জনসাধারণের স্থাপনাগুলোতে বোমা ফেলছে। অনেক সময় মানুষকে নিরাপদে সরে যাওয়ার পর্যাপ্ত সময়ও দেয়া হচ্ছে না।

আল জাজিরা বলছে, একইসঙ্গে গাজার ভেতরেও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। রিমাল পাড়ায় চার্জিং পয়েন্টে ভিড় করা বাসিন্দাদের ওপর বিমান হামলায় বহু নিহত হয়েছেন। আল-ওয়াদিতে খাদ্যের খোঁজে আসা ক্ষুধার্ত মানুষও নিহত হন। ধ্বংস হয়েছে আবাসিক টাওয়ার বুর্জ আল-নূর, সঙ্গে প্রোসিকিউশন ভবনসহ বহু স্থাপনা।

মঙ্গলবার দোহায় এক নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। লক্ষ্য ছিল আলোচনায় অংশ নিতে কাতারে অবস্থানরত হামাস নেতৃত্ব। এই হামলাকে ঘিরেই মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন নেতানিয়াহু ও জিম্মিদের পরিবার।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, দোহায় অবস্থানরত হামাস নেতাদের অপসারণ করলেই কেবল যুদ্ধ থামানো সম্ভব। তিনি হামাসের নেতাদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, তারা গাজার মানুষের কষ্টের প্রতি উদাসীন। তারাই শান্তি প্রক্রিয়াকে আটকে রেখেছে।

কিন্তু জিম্মিদের পরিবারের অভিযোগ, আসল বাধা নেতানিয়াহু নিজেই। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সমঝোতার সুযোগ এলেই তিনি হামলা চালিয়ে তা নষ্ট করেন। তাদের দাবি, এতে করে ৪৮ জিম্মির জীবন আরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে দোহা হামলার প্রতিবাদে সোমবার জরুরি সম্মেলন ডাকছে কাতার। এতে যোগ দেবেন আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতারা। তারা বলছেন, এটি শুধু সার্বভৌমত্বে আঘাত নয়, কূটনীতির ওপরও সরাসরি আক্রমণ।বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্মেলন ইসরাইলকে স্পষ্ট বার্তা দেবে যে এমন আগ্রাসনকে আর স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেয়া হবে না।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাগেরহাটে টানা সোম-মঙ্গল-বুধবার হরতাল Sep 14, 2025
শিবির প্যানেল থেকে যেভাবে ডাকসুর নেত্রী হলেন জুমা! Sep 14, 2025
img
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু ইসির Sep 14, 2025
img
ওড়না ছাড়া ছাত্রীকে দেখতে চান শিক্ষক, কলেজ গেটে ঝুলছে স্ক্রিনশট Sep 14, 2025
img
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চায় লাটভিয়া Sep 14, 2025
img
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করছে সরকার : অ্যাটর্নি জেনারেল Sep 14, 2025
img
দুর্নীতির মামলায় স্ত্রীসহ ছাগলকাণ্ডের মতিউর রহমান রিমান্ডে Sep 14, 2025
img
আমি শিবের ভক্ত, বিষ গিলে ফেলব: মোদি Sep 14, 2025
img
রাকসুর ভোট গণনা ওএমআর মেশিনেই হবে: প্রধান নির্বাচন কমিশনার Sep 14, 2025
img
ভারতের বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে নামতে পারে পাকিস্তান Sep 14, 2025
img
ভারতের টপ অর্ডার দ্রুত আউট করাই জয়ের চাবিকাঠি: মালিক Sep 14, 2025
img
বাজে হারে হতাশ হলেও সুপার ফোরের আশা রাখছেন নান্নু Sep 14, 2025
img
ইনু-হানিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা ২৮ সেপ্টেম্বর Sep 14, 2025
img

সাগর-রুনি হত্যা

১২১ বারের মতো পেছালো তদন্ত প্রতিবেদন Sep 14, 2025
img
শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনকে শেষ শ্রদ্ধা Sep 14, 2025
img
বিক্ষোভ-সহিংসতায় নেপালের পর্যটন খাতে ২৫০০ কোটি রুপির ক্ষতি Sep 14, 2025
img
৩৩ বছর পর নতুন নেতৃত্ব, শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়াতে চান ভিপি-জিএস Sep 14, 2025
img
সাংবাদিক পরিচয়ে থাকা মৌলভীবাজারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার Sep 14, 2025
img
রজনীকান্তের সিনেমায় আমিরের অভিনয় নিয়ে বিতর্ক Sep 14, 2025
img
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সচিবালয়-যমুনা ঘেরাও Sep 14, 2025