দীর্ঘ অসুস্থতার পর না ফেরার দেশে লালনসংগীতের মহারথী ফরিদা পারভীন। গত শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন বরেণ্য এই শিল্পী। পরদিন রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। শিল্পীর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন সেখানে; সে সময় ফরিদা পারভীনের স্বামী বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম আবেগঘন হয়ে পড়েন।
ফরিদা পারভীন ও তার স্বামী শুধু দাম্পত্য জীবনে নয়, শিল্প-অঙ্গনেও ছিলেন এক অনন্য যুগল। লালনগীতির সঙ্গে তার বাঁশির সুর মিলিয়ে তৈরি হতো আলাদা এক মুগ্ধতা। তাই জীবনের সঙ্গীকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন তিনি।
গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ‘তার স্মৃতি নিয়ে বাকি জীবনটুকু বেঁচে থাকতে হবে। কিন্তু এই বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। আমরা যুগলবন্দী ছিলাম। আমার বাঁশি আর ফরিদা পারভীনের গান যেভাবে ক্লিক করেছে, সেটা আর কোথাও হয়নি। আমি জানি না আমার বাঁশির সুরের কী হবে। হয় আমাকে ছেড়ে দিতে হবে, নাহলে আরও বেশি করে বাজাতে হবে, যাতে ওপারে সে তৃপ্তি পায় যে আমার হাকিম তো বাঁশিটা বাজাচ্ছে।’
গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসে। তার চলে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে, আমি জানি না। কারও জন্য তো কোনোকিছু আটকে থাকে না। এটাও ঠিক ফরিদা পারভীন আর আসবেন না।’
রোববার শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহর নামাজের পর ফরিদা পারভীনের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কুষ্টিয়ায়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন লালনসংগীতের এই কিংবদন্তি শিল্পী।
ইএ/টিকে