অবরুদ্ধ গাজা শহরের বেসামরিক মানুষদের সরিয়ে নিতে নতুন একটি রুট ৪৮ ঘণ্টার জন্য খুলে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান জোরদার করার অংশ হিসেবে শহর খালি করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গাজা শহরেই মারা গেছেন ৩০ জন। এছাড়া ড্রোন হামলা চালানো হয় একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালেও। সেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে শিশু রোগী ও তাদের পরিবারকে বাইরে সরিয়ে নিতে হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
স্কুলশিক্ষক আহমেদ বলেন, ‘আমরা যদি গাজা শহর ছেড়েও যাই, কে গ্যারান্টি দেবে যে আমরা ফিরে আসতে পারব? যুদ্ধ কি কোনোদিন শেষ হবে? তাই আমি আমার মহল্লা সাবরাতেই মরতে রাজি।’
ইসরায়েলি ট্যাংক তিন দিক থেকে গাজা শহরের ভেতরে ঢুকেছে, তবে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়নি।এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, এ অভিযান কয়েক মাস ধরে চলতে পারে, আর যুদ্ধবিরতি হলে তা স্থগিত করা হতে পারে।
অনুমান করা হচ্ছে, প্রায় এক লাখ মানুষ গাজা শহরে থেকে যাবে। ১০ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় চার লাখ মানুষ শহর ছেড়েছে। হামাস-শাসিত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রান্তিসি শিশু হাসপাতালে ইসরায়েলি ড্রোন গ্রেনেড ফেলে। যদিও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে ক্যানসার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত শিশুদের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতালও হামলার বাইরে থাকল না।
এদিকে জাতিসংঘ, বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা ও বিদেশি সরকার ইসরায়েলের এই নতুন অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে।মঙ্গলবার জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার দায় নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েল এটিকে 'ভুয়া' ও 'কলঙ্কজনক' বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
গাজা সিটির অনেকাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও প্রায় ১০ লাখ মানুষ আবার সেখানে ফিরে গিয়েছিল। এখন তাদের আবার দক্ষিণাঞ্চলে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, যেখানে তীব্র খাদ্য সংকট ও ভিড়াক্রান্ত শিবির তৈরি হয়েছে। আহমেদ নামের ওই শিক্ষক বলেন:'গাজাকে মুছে ফেলা হচ্ছে। হাজার বছরের পুরোনো একটি শহরকে বিশ্বের সবার সামনে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।'
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব।
ইএ/টিএ