জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তাকে গুম করে প্রথমে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার (ডিজিএফআই) ‘আয়নাঘর’-এ এবং পরে ডিবি অফিসে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয় বলে জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নাহিদ বলেন, ‘আদালতের কাছে আমি এবং ভিক্টিম পরিবাররা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছি। শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের দায়ী করেছি। যারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছে, তাদের বিচার ও কঠোর শাস্তি চাই।’
৫ আগস্ট সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৩ আগস্টেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করব। সে সময় আমরা নতুন সরকারের রূপরেখা নিয়েও পরিকল্পনা শুরু করেছিলাম। সেই প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। দেশের এই সংকটে তার সহযোগিতা প্রয়োজন ছিল। তাকে আমরা বলেছিলাম, যদি আন্দোলন সফল হয়, এবং আমরা সরকার উৎখাত করতে পারি, তবে নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে হয়তো আপনাকে দায়িত্ব নিতে হতে পারে - এমন প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম।’
নাহিদ আরও জানান, তাকে যে আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল, সেটি তিনি শনাক্ত করতে পেরেছেন। ‘আমাকে গুম করা হয়েছিল, শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, পরিবারের সদস্যদের হেনস্থা করা হয়েছিল। এমনকি নারী নেত্রীদের গ্রেপ্তারের হুমকিও দেওয়া হয়। একপর্যায়ে আমাদের জোর করে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করানো হয়, সেটি মোবাইলে ধারণ করে মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ‘সমঝোতার’ একটি দৃশ্য ধারণ করে জনগণকে দেখাতে চেয়েছিল সরকার।’
তিনি জানান, এই ঘটনার পর তারা অনশন শুরু করেন এবং রিট ও গণআন্দোলনের চাপে ডিবি অফিস থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
নাহিদ ইসলাম আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যেন আমি আর আন্দোলনে ফিরতে না পারি। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
ইএ/টিকে