রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্যকোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ-মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভর্তি পরীক্ষা উপ-কমিটির বৈঠকে পোষ্যকোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ সন্ধ্যায় প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অবস্থান নেন। পরে ফেসবুকে আন্দোলনের ডাক দিলে বিভিন্ন হল ও মেস থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসেন। শুরুতে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর শাখা ছাত্রশিবির একটি মিছিল নিয়ে সেখানে যোগ দেয়। তবে শিবির উপাচার্যের বাসভবনের গেইটে অবস্থান নিলেও ছাত্রদল ও অন্যান্য সংগঠন আলাদা স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
কর্মসূচির একপর্যায়ে দুই পক্ষ আলাদা স্লোগান দিতে থাকে। এরপর ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং পরে প্যারিস রোডে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন।
এ বিষয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছিলাম। কিন্তু জায়গা সংকটের কারণে একটু সরে দাঁড়াই। এরপর অন্য দলগুলোকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাই। তাঁরা তা না করে আন্দোলনকে কুক্ষিগত করতে চেয়েছে।’
অন্যদিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিন বিশ্বাস এশা বলেন, ‘আমরা দলীয় ট্যাগে আসিনি। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের দলীয় রাজনীতির মধ্যে টানার চেষ্টা করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের একাংশের মতে আন্দোলন বানচালের জন্য এটা পরিকল্পিত হতে পারে।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী সজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলন করছি। কিন্তু এসে দেখি কেউ একদিকে, কেউ অন্যদিকে। এতে আন্দোলন বিভক্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
এদিকে সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ প্রতিবেদন লেখার সময় চলমান ছিল।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শর্তসাপেক্ষে পোষ্যকোটা পুনর্বহাল করা হয়েছে। এতে বলা হয়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানরা ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেলেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বৈষম্য দূরীকরণ এবং ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। তাঁরা জানান, ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু হবে।