পূর্ব ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়াতে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে এক লাখের বেশি বিদেশি কর্মীকে কাজের অনুমতিপত্র দেয়া হয়েছে৷ এই সংখ্যা গত বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় কিছুটা বেশি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ক্রোয়েশিয়া উইকে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে মোট এক লাখ ১৫ হাজার বিদেশিকে বসবাস ও কাজের অনুমতিপত্র দেয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে দেয়া হয়েছিল এক লাখ ১২ হাজার ৩৮৯ জনকে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, অনুমতিপ্রাপ্তদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বসনিয়া ও হ্যারৎসেগোভিনা, নেপাল, সার্বিয়া ফিলিপাইন্স ও ভারতীয় কর্মীরা।
কত সংখ্যক বাংলাদেশিকে অনমতি দেয়া হয়েছে কিংবা কোনো বাংলাদেশিকে অনুমতি দেয়া হযেছে কি না সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি সংবাদমাধ্যমটি। অবশ্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশিদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিল ক্রোয়েশিয়া উইক। সেখানে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর কর্মস্থলে যোগদান না করায় কিংবা কর্মস্থলে যোগদানের পর চলে যাওয়ায় তাদের বিষয়ে সরকার ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুপ মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিষয়টি সেসময় বাংলাদেশ সরকারকেও অবহিত করা হয়েছিল বলে সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, উল্লেখিত সময়ে সবচেয়ে বেশি কাজের অনুমতিপত্র দেয়া হয়েছে পর্যটন খাতে। এই খাতে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে মোট ৩৮ হাজার ৩৭২টি অনুমতি দেয়া হয়েছে। অবশ্য পর্যটন গন্তব্য ক্রোযেশিয়ার এই খাতটি গত কয়েকবছর ধরেই শ্রমিকের সংকটে ভুগছিল।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নির্মাণ খাত। এই খাতে মোট ৩৬ হাজার ৮৬৪টি অনুমতিপত্র দেয়া হয়েছে। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে শিল্প খাত যেখানে মোট ১৩ হাজার ৭০৪টি অনুমতি প্রদান করা হয়েছে৷ পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে এই সংখ্যা সাত হাজার ৭২৩টি।
যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা
বেশি সংখ্যায় কজের অনুমতিপত্র দেয়াকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন ক্রোয়েশিয়ার এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন কোঅর্ডিনেশন ফর এজেন্সি ওয়ার্ক অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট মেডিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট পেটার লোভরিচ।
তার মতে, শ্রম মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে খুব চমৎকার কাজ করছে। এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে তারা যাচাই-বাছাই করে দেখছে, চাকরিদাতাদের আসলেই বিদেশি কর্মী নিয়োগের এমন অনুমতির প্রয়োজন কি না এবং তারা প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করছেন কি না।
মূলত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে আসা এবং ক্রোয়েশিয়ার তরুণদের বিদেশে পাড়ি জমানোর কারণেই দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
ক্রোয়েশিয়ান এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহি পরিচালক ইরিনা ভেবার বলেন, “আমাদের দেশের ইতিহাসে এখন সর্বোচ্চ সংখ্যক নিবন্ধিত শ্রমিক রয়েছেন৷ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে নতুন কর্শসংস্থান তৈরি হয়েছে৷ যেই খাতগুলোর জন্য স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না, সেই খাতগুলোতে বিদেশি শ্রমিকেরা ঘাটতি পূরণ করছেন৷ তাদেরকে ছাড়া অর্থনীতি গতিশীল হতো না।”
ভেবার বলেন, চাকরিদাতাদের কাছে এখনও স্থানীয়রা প্রাধান্য পাচ্ছেন। ভাষা, দলগতভাবে কাজ করা, দক্ষতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে স্থানীয়রাই ভালো বলে মত দেন তিনি।
এমকে/এসএন