স্কুবা ডাইভিং (পানির নিচে অক্সিজেন ট্যাংক নিয়ে সাঁতার) করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে মারা গেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জুবিন গর্গ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। তার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ গোটা ভারত।
এদিকে, শেষবারের মতো আসামে ফিরন শিল্পী জুবিন গর্গ। শোকে স্তব্ধ পুরো শহরের মানুষ যেন নেমে এল পথে। শিল্পীর কফিন নিয়ে ফুলে সাজানো অ্যাম্বুলেন্সটি সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় পৌঁছায় কাহিলিপাড়ার বাড়িতে।
এনডিটিভি লিখেছে, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুর থেকে জুবিন গার্গের মরদেহ পৌঁছায় গুয়াহাটি লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। স্ত্রী গরিমা গর্গ এবং আসাম সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন। প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখতে বিমানবন্দরে জড়ো হন হাজারও মানুষ।
বিমানবন্দর থেকে কাহিলিপাড়া পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার পথে মানুষ ফুল ছিটিয়ে, হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে আর কান্নায় ভেঙে পড়ে শেষ বিদায় জানিয়েছেন তাদের প্রিয় শিল্পীকে। শোভাযাত্রায় ছিল জুবিনের প্রিয় ছাদখোলা গাড়ি, সঙ্গে ছিলেন তার ব্যান্ড সদস্যরা। সেসময় ভক্তরা গেয়ে ওঠেন তার গান, স্লোগান দেন, জয় জুবিন দা।
অনেকের হাতে ছিল জুবিনের প্রতিকৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী অহমীয়া ‘গামছা’, যেখানে ‘জে জি (জুবিন গার্গ) ফরএভার’ লেখা ছিল। অন্যদিকে,শিল্পীর মৃত্যু ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এরমাঝেই ডেথ সার্টিফিকেট এলো প্রকাশ্যে। যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তার মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘জলে ডুবে মৃত্যু’ লেখা হয়েছে।
এরপর তিনি বলেন, এটা তো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নয়। দুটো আলাদা জিনিস। আমরা সব নথি সিআইডির হাতে তুলে দেব। আসামের মুখ্যসচিব ইতোমধ্যেই সিঙ্গাপুরের সরকারি প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যাতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত পাওয়া যায়।
আসাম সরকার আপাতত ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মৃত্যুর তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
নব্বই দশকে ভারতের সংগীতাঙ্গনে হাতেখড়ি করা আসামে জন্মগ্রহণ করা জুবিন নিজগুণে বলিউডে আসন করে নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন প্রচারবিমুখ মানুষ। হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পে জনপ্রিয়তা লাভ করলেও আসামের শিকড় ভুলে যাননি। মাতৃভূমির সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতেই গিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরে।
এবি/এসএন