জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে ‘ত্রিমুখী নাশকতার’ শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘অবিলম্বে তদন্ত’ চেয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে চিঠি পাঠিয়েছেন বলেও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ ভবনে বুধবার প্রথমে এসকেলেটর হঠাৎ থেমে যাওয়া, পরে ভাষণের সময় টেলিপ্রম্পটারের ত্রুটি এবং সর্বশেষ অডিটরিয়ামে শব্দ ব্যবস্থার গোলযোগকে তিনি ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়েছেন।
নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘জাতিসংঘে যা ঘটেছে, তা লজ্জাজনক।
এক নয়, দুই নয়—তিন তিনটি নাশকতা। এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।’
প্রথমে প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এসকেলেটরে ওঠার পরই সেটি হঠাৎ থেমে যায়। এ নিয়ে ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি সরাসরি নাশকতা। এসকেলেটরের সিকিউরিটি টেপগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। জরুরি স্টপ বোতামের রেকর্ডও দেখা হোক। সিক্রেট সার্ভিস বিষয়টি দেখছে।’
টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জাতিসংঘ কর্মীরা নাকি মজা করে এসকেলেটর বন্ধ করার কথা বলেছিলেন। এর পরই ট্রাম্প দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান দ্যুজারিক অবশ্য বলেন, ট্রাম্পের ভিডিওগ্রাফার উল্টো দিকে উঠে আসতে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনিচ্ছাকৃতভাবে সক্রিয় করে ফেলেছিলেন।
এসকেলেটর বিপত্তির পর ভাষণের সময় টেলিপ্রম্পটার হঠাৎ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। বক্তৃতার শেষ দিকে সেটি আবার সচল হলেও ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘যিনি এটি পরিচালনা করছেন, তিনি বড় বিপদে আছেন।’
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানান, টেলিপ্রম্পটার পুরোটাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নিজস্ব যন্ত্র। তারা নিজেদের ল্যাপটপ জাতিসংঘের সিস্টেমে যুক্ত করেছিলেন। অডিটরিয়ামে সাউন্ড সিস্টেমের সমস্যার অভিযোগও তুলেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, ‘শব্দ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। যারা অনুবাদকদের ইয়ারপিস ব্যবহার করছিলেন না, তারা কিছুই শুনতে পাননি।’
এ বিষয়ে জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘অডিটরিয়ামের শব্দব্যবস্থা এমনভাবেই তৈরি, যাতে প্রতিনিধিরা ইয়ারপিসের মাধ্যমে ছয়টি ভাষায় অনুবাদ শুনতে পারেন।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ এ ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদা ও নিরাপত্তায় হুমকি সহ্য করা হবে না। আমরা দ্রুত তদন্ত আশা করি।’
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটও এক্স-এ লিখেছেন, ‘যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এসকেলেটর বন্ধ করা হয়ে থাকে, তবে দায়ীদের চাকরি হারাতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে।’
এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে চিঠি লিখে ‘অবিলম্বে তদন্ত’ চেয়েছেন।
এবি/টিএ